অনলাইন ডেস্কঃ
দেশের সব মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে পাঁচ সদস্যের একটি করে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক আদেশে গত বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
যৌন হয়রানির মামলা প্রত্যাহার না করায় ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিল সরকার।
ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হাই কোর্টের রিট পিটিশনের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এবং এর আওতাধীন অফিস ও দেশের সকল সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা দেয়।
“এ আদেশ মোতাবেক প্রতিটি অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে।”
প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠাকে জরুরি ভিত্তিতে একটি করে কমিটি গঠন করে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ করতেও বলা হয়েছে।
যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ২০০৯ সালে হাই কোর্টের নির্দেশনায় বলা হয়, কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব-যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
সচেতনতা বৃদ্ধি, কমিটি গঠন ও আইন প্রয়োগের বিষয়টি শিক্ষার্থীদের জানাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিও নির্দেশনা ছিল উচ্চ আদালতের।
এছাড়া যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটলে বিদ্যমান আইনে এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিচার নিশ্চিত করার কথাও বলা আছে নির্দেশনাটিতে। সেখানে আরও বলা আছে, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে যতদিন না একটি পৃথক ও পূর্ণাঙ্গ আইন গ্রহণ না করা হয় ততোদিন পর্যন্ত গণপরিসরে এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ের সমস্ত কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
উচ্চ আদালতের ওই নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেল গঠন করা হয়, যারা শিক্ষার্থীদের এ সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত করেন।
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা থেকে এ বছর আলিম পরীক্ষা দিচ্ছিলেন নুসরাত। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনেছিলেন তিনি।
গত ২৬ মার্চ নুসরাতের মা শিরীনা আক্তার মামলা করার পরদিন সিরাজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই মামলা প্রত্যাহার না করায় ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে মাদ্রাসার একটি ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন দেয় বোরকা পরা কয়েকজন।
আগুনে শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়া নুসরাত ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।