নিজস্ব প্রতিবেদক, রামুঃ
রামুর পূর্ব রাজারকুলে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের ৮৪ হাজার ধর্মস্কন্ধ পূজা ও স্বর্গপূরী উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমবারের মতো নানা আয়োজনে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) ত্রি-স্মৃতি বিজড়িত শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করেছে, পূর্ব রাজারকুল সদ্ধর্মোদয় বৌদ্ধ বিহারের দায়ক-দায়িকারা। রামুর পূর্ব রাজারকুল সদ্ধর্মোদয় বৌদ্ধ বিহারে অনুষ্ঠিত স্বর্গপুরি উৎসবে সমবেত র্যালী, অষ্টপরিস্কারদান, মহাসংঘদান ৮৪ হাজার ধর্মস্কন্ধ পূজা, ব্যুহচক্র মেলা ও জ্ঞাতিসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাঙ্গলিক এ অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের প্রাজ্ঞ পন্ডিত ভিক্ষুসংঘ, জাতীয় সংসদ সদস্য, সামরিক, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, বরেণ্য বৌদ্ধ ব্যক্তিত্বরা সহ হাজারো পূর্ণ্যার্থীর অংশ গ্রহনে এ উৎসব মহা মিলন মেলায় পরিণত হয়।
একুশে পদকে ভূষিত বৌদ্ধ পন্ডিত, রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারের অধ্যক্ষ উপসংঘরাজ ভদন্ত সত্যপ্রিয় মহাথের’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের বিকালের অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন, কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব¦ সাইমুম সরওয়ার কমল।
পূর্ব রাজারকুল সর্দ্ধমোদয় বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত প্রজ্ঞাবিনয় ভিক্ষুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ধর্ম দেশনা করেন, চট্টগ্রাম নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারের আবাসিক প্রধান ভদন্ত প্রিয়রত্ন মহাথের, শ্রীকুল মৈত্রী বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত প্রজ্ঞাতিলোক থের, রামু বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের পরিচালক ভদন্ত করুণাশ্রী মহাথের, রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারের সহকারী পরিচালক ভদন্ত শীলপ্রিয় থের, রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত জ্যোতিসেন থের, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রজ্ঞামিত্র অরণ্য বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রের পরিচালক ভদন্ত প্রজ্ঞা করুণা থের ও চাকমারকুল অজন্তা বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত প্রজ্ঞা মুদিতা ভিক্ষু প্রমুখ।
পূর্ব রাজারকুল সর্দ্ধমোদয় বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত প্রজ্ঞাবিনয় ভিক্ষু জানান, বিভিন্ন সময়ে এ বিহারে ব্যুহচক্র মেলার আয়োজন করা হলেও এবছর প্রথম বারের মতো স্বর্গপুরি উৎসবের আয়োজন করা হয়। তিনি বলেন, মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা কর্মফলে বিশ্বাসী। জীবদ্দশায় ভাল কর্মের প্রভাবে মানুষ স্বর্গগামী হতে পারে। তাই ব্যুহচক্রের মাধ্যমে মানুষকে সংসার চক্রের ধারনা দেওয়া হয়। আর স্বর্গপুরি মানে সংসার চক্রে ঘুরতে ঘুরতে মানুষ এক পর্যায়ে স্বর্গে আরোহন করলেও কোন এক সময় আবারও তাকে মর্ত্যলোকে ফিরে আসতে হয়। এই ধারনা থেকে এবার এখানে স্বর্গপুরি উৎসব ও ব্যুহচক্র মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ মেলার প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে, কান্ডবাজি। সং সেজে বিভিন্ন গ্রাম থেকে গ্রামবাসীরা নেচে গেয়ে কান্ডবাজি নিয়ে এসে উৎসবে অংশ গ্রহন করে। এবারও প্রায় দশটি গ্রাম থেকে কান্ডবাজি নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে।