আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
শ্রীলঙ্কার পূর্বাঞ্চলে সন্দেহভাজন সশস্ত্র হামলাকারী দল এবং পুলিশ ও সেনাসদস্য নিয়ে গঠিত যৌথবাহিনীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ছয় শিশুসহ ১৫টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে চার বন্দুকধারী ও একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
ইস্টার সানডের দিনে আত্মঘাতী বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আটকে গত রাতে এই অভিযান পরিচালনা করে দেশটির পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ কমান্ড। শনিবার সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ও সরকারি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে গার্ডিয়ান।
দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ বাত্তিকালোয়ার আমপারা শহরের সেইন্টামারুথু নামক স্থানে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র ইসলামী চরমপন্থীদের মধ্যে এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ইস্টার সানডের দিনে এখানেও আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।
সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র সুমিত আতাপাত্তু জানিয়েছেন একটি বাড়িতে অভিযান শুরু করলে বন্দুকধারীরা সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া শুরু করে। তিনি বলেন, ‘পাল্টা প্রতিরোধের অংশ হিসেবে চালানো গুলিতে দুজন বন্দুকধারী নিহত হয়।’ বন্দুক হামলায় পড়ে একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
পরে পুলিশ জানায় নিহতদের মধ্যে অভিযুক্ত চারজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী নিহত হয়েছেন। ইস্টার সানডের সেই বোমা হামলার পর হামলাকারীদের খুঁজতেই সেনাবাহিনী ও দেশটির পুলিশ এই যৌথ অভিযান পরিচালনা করে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেশটির এক সামরিক মুখপাত্র বলেছেন, শ্রীলঙ্কার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ বাত্তিকোলার আমপারা শহরে পুলিশের চালানো ওই অভিযানের সময় একটি বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলের পাশেই আরও একটি অভিযানে চালায় তারা। সেই অভিযানে বেশ কিছু বিস্ফোরক ও আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের ব্যবহার করা পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী সতর্ক করে বলেন, হামলার আশঙ্কা এখনো পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি।
গত রোববারের সেই ভয়াবহ হামলার পর দেশজুড়ে ১০ হাজার অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গতিবিধির ওপর নজর রাখা এবং ধর্মীয় স্থাপনায় নিরাপত্তার জন্যই অতিরিক্ত এই সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
শ্রীলঙ্কা সরকার হামলার জন্য স্থানীয় ইসলামী চরমপন্থী দল ন্যাশনাল তাওহীদ জামায়াতকে দায়ী করলেও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
গত রোববার খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের ইস্টার সানডে চলাকালে গির্জা ও বিলাসবহুল হোটেলে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনায় তিন শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। রাজধানী শহর কলম্বো, অদূরের নেগম্বো ও পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ বাত্তিকোলার সেই হামলায় আহত হয়ে অন্তত ৫০০ মানুষ চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হামলার পর খুব দ্রুত নিহতের সংখ্যা বাড়ছিল। ঘটনার দুদিন পর নিহতের সংখ্যা এসে দাঁড়ায় ৩৫৯ জনে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিহতের সেই সংখ্যা প্রায় একশ কম বলে জানান। তার দেয়া হিসাব মতে, হামলায় মোট ২৫৩ জন নিহত হয়েছেন।
সূত্রঃ জাগোনিউজ