হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি মদিনাতুল উলুম মডেল আলিম ইনস্টিটিউট মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ সৈয়দ হোসাইনের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে একই প্রতিষ্ঠানের চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টায় মাদ্রাসার অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকেই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা হামলাকারী শিক্ষকদের দুপুর পর্যন্ত অবরূদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পুলিশের উপস্থিতিতে মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা অধ্যক্ষের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করে বিক্ষাভ প্রদর্শন করেন। পরে শিক্ষার্থীদের একটি বিক্ষোভ মিছিল মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয়।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন- সকালে প্রথম প্রথম ঘন্টা শেষ না হতেই আরবি প্রভাষক আবু বক্করের নেতৃত্বে একদল শিক্ষক অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ সৈয়দ হোসাইনের ওপর হামলা চালায়। হামলায় চোঁখ, মুখ ও কোমরে আঘাত পান অধ্যক্ষ। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা মর্মাহত হয়েছেন। ঘটনার পর মাদ্রাসা অধ্যক্ষকে শিক্ষার্থীরা নাইক্ষ্যংছড়ি উপস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। বিকেলে সেখান থেকে তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। অধ্যক্ষের ওপর হামলার খবর শুনে এক শিক্ষার্থী স্ট্রোক করেছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ সৈয়দ হোসাইন অভিযোগে জানান- দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক) সততা সংঘের অনুদানের টাকাকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক (৩) আবু বক্কর, সহকারি শিক্ষক (শরীর চর্চা) ছৈয়দুল বশর, সহকারি শিক্ষক (আইসিটি) মোহাম্মদ ইসহাক ও সহকারি শিক্ষক (ইংরেজি) তাজেম উদ্দিন তাঁর ওপর হামলা করে। এসময় সহকারি শিক্ষকেরা অধ্যক্ষকে কিল-ঘুষি মারেন। এ ঘটনা দেখে শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় উত্তেজনা তৈরী করেন।
তবে মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক (আইসিটি) মোহাম্মদ ইসহাক বলেন- দুর্নীতি দমন কমিশনের টাকা অধ্যক্ষ নিজেই তাকে উত্তোলন করেতে বলে উল্টো অভিযোগ দিয়েছেন। তা নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়েছে মাত্র। এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে নিতে মাদ্রাসার দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ ও সহকারি শিক্ষক মো. জাকারিয়া ছাত্র-ছাত্রীদেরকে উস্কানি দিয়ে বিক্ষোভ করিয়েছে। পাশাপাশি আগে থেকেই মাদ্রাসায় পড়ে না এমন যুবকদের এনে শিক্ষকদের মানসম্মান ক্ষুন্ন করিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া আফরিন কচি বলেন- ঘটনাটি অবশ্যই দু:খজনক। এ ঘটনায় থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেনকে আহবায়ক ও একাডেমিক সুপার ভাইজার মো. সোহেল মিয়াকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাঁদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।