লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
পর্যাপ্ত ঘুমিয়েও ক্লান্তভাব না কাটলে বুঝতে হবে অন্য কোনো কারণে কর্মশক্তি হারাচ্ছেন।
সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানোর পরও সবসময় ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত লাগে। আর এমন মানুষের সংখ্যা মোটেই কম নয়। খাদ্যাভ্যাস আর জীবনযাত্রা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক। তাই এখানে সামান্য কিছু পরির্তনের মাধ্যমেই এই সীমাহীন ক্লান্তির অবসান হতে পারে। তবে তার আগে জানতে হবে ক্লান্তির ভাষা।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যের আলোকে জানানো হল ক্লান্তির নানান ধরণ সম্পর্কে।
কর্মশক্তির তারতম্য
যারা তড়িৎ কর্মশক্তির জন্য অতিরিক্ত চা, কফি বা অন্যান্য চিনিযুক্ত পানীয় পান করেন এবং বিকেলের দিকে যেন শরীর আর চলছেনা এমন অনুভব করেন তাদের উচিত হবে রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করানো।
চিনিযুক্ত পানীয় পান করা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় তৎক্ষণাত, ফলে মেলে তড়িৎ কর্মশক্তি। তবে এর প্রভাব ফুরিয়ে যায় অল্প সময়েই, ঘিরে ধরে ক্লান্তি।
রক্তে শর্করার মাত্রায় ঘন ঘন পরিবর্তন শরীরের জন্য ক্লান্তিকর। অনিদ্রা, অমনযোগী এবং খিটখিটে মেজাজ ইত্যাদি রক্তে শর্করার ভারসাম্যহীনতার লক্ষণ।
করণীয়:
এই সমস্যা থেকে বাঁচতে প্রতিদিনের খাবারে থাকা চাই প্রোটিন ও ভোজ্য আঁশযুক্ত খাবারের আধিক্য। পাশাপাশি প্রতিবেলার খাবারের মাঝে অনেকটা সময়ের ব্যবধান রাখা যাবে না। কয়েক ঘণ্টা পর পর হালকা খাবার খেতে হবে।
উদ্দামের অভাব:
শরীর প্রচণ্ড দূর্বল মনে হওয়া এবং কোনো কিছু করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা না থাকার পেছনে কারণটা হয়ত ‘আয়রন’ বা লৌহের অভাব। ‘আয়রন’ হল ‘হিমোগ্লোবিন’য়ের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা মস্তিষ্কের কোষে শক্তি যোগায়। যেসব নারীর বেশিসময় ধরে ঋতুস্রাব হয় তাদের মাঝে ‘আয়রন’য়ের অভাব বেশি দেখা যায়। ‘আয়রন’য়ের অভাব শরীর দূর্বল লাগার কারণ হল কর্মশক্তি তৈরি হওয়ার জন্য যে অক্সিজেন প্রয়োজন তা পর্যাপ্ত পরিমাণে শরীরের কোষে পৌঁছায় না।
করণীয়:
এই সমস্যা সমাধানে মাংস, সবুজ শাকসবজি, ডাল, বাদাম ইত্যাদি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।
পেট খালি
যারা প্রায়ই সময়ের অভাবে খাওয়া বাদ দেন তাদের নিজেদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে নতুন করে ভাবা উচিত। খালি পেটে পরিশ্রম করে বেড়ালে কর্মশক্তি কমবে এটাই স্বাভাবিক। এই অবস্থায় শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা পরীক্ষা করানো উচিত। কারণ শরীরের শক্তি উৎপন্ন করা এই খনিজের একটি অন্যতম কাজ।
করণীয়:
এই পরিস্থিতিতে সবুজ পত্রল শাকসবজি আর শষ্যজাতীয় খাবার উপকারে আসবে।
কর্মস্পৃহার অভাব
কিছু সময় আসে যখন কোনো কাজেই মনোনিবেশ করা যায় না। কাজে দক্ষতা থাকার পরেও মানসিক স্পৃহা আসে না। এমনটা হওয়ার পেছনে দায়ী ভিটামিন বি’য়ের অভাব।
ভিটামিন বি-ওয়ান’য়ের অভাব হলে স্মৃতিশক্তি কমে যায়, মেজাজ খিটখিটে থাকে, মনোযোগের অভাব দেখা দেয়। অপরদিকে ভিটামিন বিটুয়েলভ’য়ের অভাব হলে সৃষ্টি হয় দ্বিধাদ্বন্দ্বের।
করণীয়:
মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে তার মাত্রা কমাতে হবে। আর বাড়াতে হবে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারের মাত্রা।
শরীর ক্লান্ত, মন সক্রিয়: এমন অনুভূতির কারণ হতে পারে অতিরিক্ত কফি। ‘ক্যাফেইন’ গ্রহণ কিছু সময়ের জন্য কর্মশক্তি বাড়ায় ঠিক-ই তবে অতিরিক্ত গ্রহণ করলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যেমন: শারীরিকভাবে ক্লান্ত কিন্তু মানসিকভাবে শান্ত নন, ফলে ঘুম আসে না।
করণীয়:
কফির পরিবর্তে ভেষজ চা পান করতে পারেন।
সূত্রঃ বিডিনিউজ