অনলাইন ডেস্কঃ
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সহায়তার যে প্রতিশ্রুতি বিশ্বনেতারা দিয়েছেন, তা বাস্তবায়নে অটল থাকতে তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে স্থানীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে অর্থবহ অংশীদারিত্ব এবং সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরামে ‘লিডারস ডায়ালগ অন লোকালাইজিং এসডিজিস’ শীর্ষক সংলাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কো-মডারেটরের দায়িত্ব পালনকালে এ আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসডিজি বাস্তবায়নে কার্যকর অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা স্থানীয় এবং বৈশ্বিক উভয় পর্যায়ে সমভাবেই প্রয়োজনীয়। কাজেই আমি সকল বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারে অটুট থাকার অনুরোধ জানাব, যা আমরা এই গ্রহ এবং মানুষের জন্য করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত আমরা একত্রে এসডিজির সুবিধাগুলোকে সবচেয়ে প্রান্তিক জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারবো, যাদের অবস্থান প্রায়শই সমাজের একেবারে তলানিতে থাকে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০০ সালে সহস্রাব্দের ঘোষণাপত্র এবং ২০১৫ সালে এসডিজি গ্রহণের অনুষ্ঠানের সময় তিনি ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন। এসডিজি হল মানুষের প্রয়োজন, আকাঙ্খা এবং অধিকারের বহিঃপ্রকাশ। তিনি বলেন, ‘এসডিজি স্থানীয়করণ হল স্থানীয় স্তরে কৌশলগুলো বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণের প্রক্রিয়া যা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগগুলো প্রতিফলিত করে। স্থানীয়করণ লক্ষ্যকে স্থানীয় বাস্তবতা ও আকাঙ্খায় রূপান্তরিত করে। এটি ব্যক্তি হিসেবে উদ্বুদ্ধকরণ এবং বাস্তবায়নের জন্য একটি সংহত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই পদ্ধতির প্রচার করে।’
বৈশ্বিক এজেন্ডার সুবিধা গ্রহণের চ্যালেঞ্জ হল স্থানীয় পর্যায়ে শেষ ব্যক্তির কাছে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং স্থানীয়করণের বিষয়টি। এসডিজি’র জন্য স্থানীয়করণ কৌশলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এসডিজির লক্ষ্যসমূহকে সম্পৃক্ত করেছি এবং আবার আমাদের ২০২১ সাল থেকে ২০২৫ পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাতেও জুড়ে দিয়েছি।’
এসডিজি বাস্তবায়নে সমন্বিত অ্যাকশন প্ল্যান বিষয়ে উদ্ভাবনী পর্যবেক্ষণ কাঠামো এবং অনলাইন এসডিজি ট্র্যাকার চালু করার কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। নির্ভুল ডেটা সংগ্রহ প্রক্রিয়া এবং তা ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় ডেটা সমন্বয় কমিটি গঠনের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বেসরকারি খাত ও দায়িত্বশীল সিভিল সোসাইটিকে অন্তর্ভুক্ত করে আমরা সম্পদ প্রবাহ এবং উদ্ভাবনী অর্থায়নের চেষ্টা করছি।’
পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নে আমাদের দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সহায়তা বাড়ানো প্রয়োজন।’ কার্যকরভাবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয়করণে বাংলাদেশ সরকার ৪০টি সূচক নির্ধারণ করেছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল কালাম আজাদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক প্রমুখ।
সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন