অনলাইন ডেস্কঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করলেই অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সাম্প্রদায়িকতা নয়, চাই মানবিক বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
আব্দুর রহমান বলেন, ’৭১ এর পরাজিত শক্তি অতীতেও অনেকবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। যখনই সুযোগ পায় তখনই মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই শক্তিকে দমন করা হয়েছে।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা আমাদের চেতনাকে ধ্বংস করেছে। কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর আবার সেই চেতনাকে ফিরিয়ে এনেছেন। তবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নকে পুনরুদ্ধার করতে ১৯ বার আঘাতের শিকার হয়েছেন তিনি। তারা দেশকে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করেছিল, সেই ষড়যন্ত্র বানচাল করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বিশ্ব সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরাও এগিয়ে যাচ্ছি। সামনে এগিয়ে যেতে অনেক বাধা আসবে তা প্রতিরোধ করেই এগিয়ে যেতে হবে।
জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক প্রতিরোধ মোর্চা আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ।
জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক প্রতিরোধ মোর্চার প্রধান সমন্বয়ক এফ এম শাহীনের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফারজানা মাহমুদ।
গোলটেবিল বৈঠকে সাবেক সেনাপ্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. জে. (অব.) এম হারুনুর রশীদ বীরপ্রতীক বলেন, সাম্প্রদায়িকতা কোথা থেকে শুরু হয়েছে সেটা জানতে হবে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চেতনাকে কবর দিয়ে নতুন চেতনার সৃষ্টি করা হয়েছিল। ওই সময়কে ভুলে গেলে চলবে না। তবে সেই সময়ের কথা স্মরণ করেই আমরা অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার চেষ্টা করব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, দেশে এখনো একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধী মুজাহিদের টুপি মাথায় দেয়া হয়। জীবনে দেখা একাত্তরের ঘাতকদের সব বিষয় ও সংস্কৃতি তরুণ প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরতে হবে। আমরা সবাই মানুষ, আমরা সবার বন্ধু। এটা সবার কাছে প্রচার করতে পারলে সাম্প্রদায়িকতা দূর হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর ও সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশে বসবাসের সবার সমান অধিকার আছে। তবে এ দেশে যারাই বসবাস করবে তাদের সমান অধিকার দিতে হবে। তা হলেই অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়া সম্ভব হবে।
নিউজ২৪ এর হেড অব কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স সামিয়া রহমান বলেন, সমাজটা কেন সাম্প্রদায়িকতার দিকে সেটা জানি না। চারপাশে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু মানসিকতার উন্নয়ন হচ্ছে না। তবে এটা হচ্ছে না কেন সেটা জানি না।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ল্যাবএইড হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, অধ্যাপক ডা. আমজাদ হোসেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য অরুণা বিশ্বাস, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের চেয়ারম্যান ক্রিস্টিন রিচার্ডসন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কুমার দেবুল দে, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি ফয়জুল্লাহ আমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক খায়ের মাহমুদ, বিবার্তা২৪ ডট নেটের সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি ও জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ মোর্চার সমন্বয়ক বাপ্পাদিত্য বসু।
সূত্রঃ জাগোনিউজ