গিয়াস উদ্দিন ভুলু , টেকনাফ:
টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন সাধারণ মানুষ একটি আতংক বয়ে বেড়াচ্ছে। পৌরসভার শহরের অলিতে গলিতে মানুষের মুখে মুখে শুধু একটি ভয়ানক নাম উচ্চারণ হচ্ছে সেই আতংকের ব্যক্তিটি হল সন্ত্রাসী ও কুখ্যাত ডাকাত সর্দার আবদুল হাকিম। এই আবদুল হাকিম ডাকাতের নামে টেকনাফ মডেল থানায় ৬/৭টি হত্যা মামলা রয়েছে। এই আবদুল হাকিম ডাকাত দলকে ধরতে পুলিশ সদস্যরা দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
বিভিন্ন সুত্রে আরো জানা যায়, এই ডাকাত সর্দার আবদুল হাকিম কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন ডাকাত দলের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রয়েছে। সেই সুত্র ধরে আবদুল হাকিম কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছে। বিগত ১ বছরের ব্যাবধানে এই আবদুল হাকিম ডাকাতের নেতৃত্বে খুন হয়েছে পৌরসভার পুরাতন পল্লান পাড়া এলাকার মো: সেলিম প্রকাশ মুন্ডি সেলিম, সেই ধারাবাহিকতায় গত ৪ জুলাই গুলি করে হত্যা করে সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলামকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফ উপজেলার সুশীল সমাজের বেশ কয়েকজন আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, এই আবদুল হাকিম ডাকাত দীর্ঘ কয়েক বছর আগে মিয়ানমার থেকে এসে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী যুবকে নিজের আয়ত্বে এনে গড়ে তুলে ডাকাত দলের বাহিনী।
এই বাহিনী দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে টেকনাফ উপজেলার বড় ধরনের কোন অপরাধ কর্মকান্ড সংগঠিত হলে নিমিষে মানুষের মুখে মুখে উচ্চারণ হয় সেই আবদুল হাকিম ডাকাতের নাম।
এদিকে আওয়ামীলীগ নেতা হত্যার পর টেকনাফ পুলিশ প্রশাসন আবদুল হাকিম দলকে ধরতে শুরু করেছে সাড়াঁশি অভিযান। সেই ধারাবাহিকতায় টেকনাফ মডেল থানার ওসি আবদুল মজিদের নেতেৃত্বে গত কয়েক দিনের মধ্যে আটক হয় আবদুল হাকিম ডাকাতের ভাই বহু মামলার পলাতক আসামী নজির ডাকাত ও তার সহযোগি নুরুল আবছার নরু।
অন্যদিকে সিরাজ মেম্বার হত্যার একই দিনে খুন করা হয় মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম এলাকার আওয়ামীলীগ নেতা নাগু মেম্বারকে। পুলিশ সুত্রে জানা যায়, সেই হত্যা মামলার প্রধান আসামী নাগু মেম্বারের আপন ভাতিজা ডাকাত সর্দার ও জলদস্যু সরওয়ার উদ্দিন বতইল্যা ও তার সহযোগি ডাকাত ইলিয়াছ।
১৪ জুলাই গভীর রাতে টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়নের ১৪ নং ব্রিজ এলাকায় টেকনাফের আবদুল হাকিম ডাকাত দল ও মহেশখালীর সরওয়ার উদ্দিন বতইল্যা ডাকাত দলের সাথে বন্দুক যুদ্ধে দুই পক্ষের গোলা গুলিতে নিহত হয় মহেষখালীর দুই শীর্ঘ ডাকাত। খবর পেয়ে টেকনাফ থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ ও দুটি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ আমাদের রামু ডটকমকে জানান, ১৪ জুলাই ভোররাতে টেকনাফের ডাকাত অধ্যুষিত হ্নীলা ইউনিয়নের স্থল বন্দরের উত্তরে ১৪নং ব্রীজ সংলগ্ন পাহাড়ী এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দূর্ধর্ষ ডাকাত আব্দুল হাকিম ও সরওয়ার উদ্দিন বতইল্যার ডাকাত দলের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। দুইপেক্ষর মধ্যে ঘন্টা ব্যাপী বন্দুক যুদ্ধে প্রতিপক্ষের গুলিতে ঘটনাস্থলেই ২ জন ডাকাত নিহত হয়।
ওসি আবদুল মজিদ আরো জানান, বন্দুকযুদ্ধে ঘটনায় টেকনাফ থানায় অজ্ঞাত নামা ডাকাত দলের সদস্যদেরকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। যার নং ২৪/১৬। তিনি আরো বলেন, চিহ্নিত ডাকাত দল ও সন্ত্রাসীদের নির্মুল করতে পুলিশ সদস্যদের সাড়াঁশি অভিযান অব্যাহত থাকবে।