খালেদ শহীদ, রামুঃ
রামুতে জেএসসি ও জেডেসি পরীক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে পরীক্ষার হলে যেতে, সড়কের যানজট নিরসন করছে স্বয়ং ইউএনও। বুধবার (৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা হতে ১০টা পর্যন্ত রামু উপজেলা সদরের চৌমুহনি ষ্টেশন মোড়ে ইউএনও প্রণয় চাকমা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দেড় ঘন্টা যানজট নিরসনের দায়িত্ব পালন করেন।
জেএসসি, জেডেসি ও কারিগরী পরীক্ষা দিতে এ সময়ে ৩ হাজার ১২৯ জন পরীক্ষার্থী রামু চৌমুহনী ষ্টেশন হয়ে রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, রামু উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, মেরংলোয়া রহমানিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা ও রামু টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনষ্টিটিউট পরীক্ষা কেন্দ্রে যায়। সড়কে যানজট বা দ্রæতগতির অস্থিরতার মধ্যে পরীক্ষার্থীরা নির্ধারিত সময়ে হলে উপস্থিত হতে পারবে কিনা এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন শিক্ষক-পরীক্ষার্থী, অভিভাবকরা।
ইউএনও প্রণয় চাকমা স্বয়ং যানজট নিরসনে সড়কে নেমে পড়েন। এমন পদক্ষেপে পরীক্ষার্থীরা যানজটে না পড়ে, সঠিক সময়ে হলে উপস্থিত হয়ে নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পারছে। পরীক্ষার হলে যাওয়ার সময়ে ইউএনও’র এমন হস্তক্ষেপে সাধুবাদ জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক, ব্যবসায়ী সহ সাধারণ পথচারীরা। যানজট নিরসন করতে গত শনিবার (২ নভেম্বর) থেকে পরীক্ষা শুরুর দেড় ঘন্টা আগে চৌমুহনী ষ্টেশনে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে ইউএনও স্বয়ং উপস্থিত হন বলে জানিয়েছেন চৌমুহনী ষ্টেশনের ব্যবসায়ীরা।
পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, রামুর ব্যস্ততম ষ্টেশন চৌমুহনীতে যানজট নিরসনে কোন ট্রাফিক ব্যবস্থা না থাকায় যানবাহন গুলো চলাচলে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। এতে নিত্য যানজট লেগে থাকে। নিত্য দিনের যানজটের ভীতিতে নির্ধারিত সময়ে হলে যেতে পারবে কিনা, এনিয়ে সংশয়ে ছিলো পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ সমস্যা নিরসনে যানাবহন গুলোর বিক্ষিপ্ত চলাচল সামলাতে সড়কে নেমে আসেন স্বয়ং রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমা।
বুধবার সকালে রামু চৌমুহনীর ষ্টেশনের কয়েকজন পথচারি ও গাড়ি চালক জানান, সকাল সাড়ে ৮টার হতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা প্রশাসনের কর্মকর্তা, পুলিশ ও নিজ অফিস কর্মচারীদের নিয়ে রামু উপজেলার সদরের ব্যস্ততম ষ্টেশন চৌমুহনিতে এসে সড়কে অবস্থান নেন। তিনি নিজে চলাচলকৃত গাড়িগুলোকে সারিবদ্ধভাবে নির্ধারিত সড়কে আইন মেনে যাওয়ার নির্দেশ দেন। জেএসসি ও জেডেসি পরীক্ষার দিনে ইউএনও নিজে চৌমুহনির যানজট নিরসনে ট্রাফিকের ভ‚মিকা পালন করেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ উদ্যোগকে প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেছেন, রামু সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবদুল হক, সুশাসনের জন্য নাগরিক ‘সুজন’ রামু উপজেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইজত উল্লাহ, বাংলাদেশ বেতার শিল্পী মানসী বড়ুয়া, রামু প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম সেলিম, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইফসান খাঁন ইমন সহ অনেকে। তারা বলেন, রামুর প্রধান সড়কের এ বেহাল দশা খুবই দুঃখজনক। জরুরী মুহুর্তে পরীক্ষার্থীদের চলাচল সহযোগিতা করা অত্যন্ত দায়িত্বশীল কাজ করছেন ইউএনও স্বয়ং।
সুশাসনের জন্য নাগরিক ‘সুজন’ রামু উপজেলার সভাপতি মাষ্টার মোহাম্মদ আলম বলেন, আগামী ১৭ নভেম্বর থেকে শুরু হবে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা। ওই সময়ে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের জনগুরুত্বপূর্ণ এ পদক্ষেপ প্রয়োজন হবে। রামু চৌমুহনীকে ময়লা-আবর্জনা মুক্ত করতেও ইউএনও মহোদয়ের পদক্ষেপ জরুরী।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা আমাদের রামু ডটকম কে বলেন, রামু চৌমুহনীতে প্রায় সময় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এ জন্য জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার্থী সহ অভিভাবকরা ভয়ে ছিল নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার হলে যেতে পারবে কিনা। পরীক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘেœ পরীক্ষার কেন্দ্রে যেতে পারে, পরীক্ষা শুরুর দেড় ঘন্টা আগে এসে যানজট নিরসনের ব্যবস্থা করি। পরীক্ষার দিনে পরিক্ষার্থীরা যেন ভোগান্তি না পড়ে, সেজন্যই প্রথম দিন থেকে আমি সড়কে উপস্থিত হয়েছি।
তিনি বলেন, চৌমুহনির যানজট নিরসনে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এখন থেকে সম্মিলিতভাবে কাজ করা হবে। নির্ধারিত স্থানে সারিবদ্ধ ভাবে গাড়ি রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যানজট নিরসনে অভিযান অব্যাহত থাকবে।