অনলাইন ডেস্কঃ
কৃষি এবং কৃষককে গুরুত্ব দিয়ে সরকার উন্নয়ন পরিকল্পনা করে থাকে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার সকাল ১১টায় ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ কৃষক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমরা উন্নত হব, শিল্পায়নে যাব। কিন্তু কৃষককে ত্যাগ করে নয়, কৃষিকে ত্যাগ করে নয়।
“কারণ কৃষি আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। খাদ্য দেয়, পুষ্টি দেয়, সবকিছু করে। কাজেই আমাদের দেশে উন্নয়ন প্রকল্পটা আমরা এমনভাবে নিই, যাতে কৃষকদেরকে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই।”
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পর অনেকের কৃষিকাজ করতে না চাওয়ার প্রবণতার সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
“আমাদের যারা লেখাপড়া শেখে.. লেখাপড়া শিখলেই তারা আর মাঠে যেতে চায় না। কৃষকের ছেলে, বাবা কৃষি কাজ করে লেখাপড়া শিখিয়েছে। তার ছেলেমেয়ের অবশ্যই মাঠে যাওয়া উচিত। দুর্ভাগ্য আমাদের, দু’পাতা পড়েই মনে করে আমি কেন যাব? আমার মনে হয় ওই চিন্তা থেকে দূরে থাকা দরকার।
এবার কৃষকের ধান কাটতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দেওয়া নির্দেশের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “নিজের কাজ নিজে করায় লজ্জার কিছু থাকেনা। নিজের ফসল নিজে উৎপাদন করব, নিজের খাবার নিজে খাব, তাতে লজ্জার কি আছে? কোনো কাজে লজ্জার কিছু নেই।”
এ বিষয়ে কৃষকলীগের একটা ভূমিকা থাকা দরকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমি মনে করি আমাদের স্কুলজীবন থেকে এটা অভ্যাস করা দরকার।”
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যার ঘটনা স্মরণ করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে সঙ্গে সঙ্গে আমরা আমাদের প্রথম কেবিনেট মিটিংয়ে সারের দাম কমিয়ে দিলাম। প্রায় চার দফা আমরা কমিয়েছি। আমরা ভর্তুকি দিচ্ছি।”
কৃষক ও শ্রমিকের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য জাতির জনকের আজীবন সংগ্রামের কথা স্মরণ করে কৃষকের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
কৃষকের ন্যায্যমূল্যে উন্নতমানের বীজ পাওয়া নিশ্চিতে জাতির পিতা প্রতিষ্ঠিত বিএডিসি লাভজনক না বলে বন্ধ করে দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “সব সময় সব কিছুতে লাভ লোকসান দেখলে চলে না। আমার দেশের মানুষ কতটুকু উপকার পাবে সেটাই আমাদের চিন্তার বিষয় হতে হবে।”
যত্রতত্র শিল্প-কারখানা স্থাপন না করার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি। এটার অর্থ হল কোনো কৃষিজমি যেন নষ্ট না হয়। যেখানে সেখানে যত্রতত্র একটা ইন্ডাস্ট্রি এটা কেউ করতে পারবে না। যারা ইন্ডাস্ট্রি করতে চায় ওই ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চলে তাদের প্লট দেওয়া হবে এবং সব ধরনের সার্ভিস সেখানে দেওয়া হবে। সেখানেই তারা শিল্প করে তুলবে।”
রপ্তানিতে কৃষি পণ্যের প্রাধান্য নিশ্চিত করার পরিকল্পনার পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও প্রতিটি মানুষের কাছে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দিতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার সামসুল হক রেজা, সর্বভারতীয় কিষাণ সভার সাধারণ সম্পাদক অতুল কুমার অঞ্জন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রঃ বিডিনিউজ