লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
অনেকদিন সুস্থভাবে বাঁচতে চাইলে শুধু জীবনের মানে খুঁজলেই হবে না, পেতেও হবে।
আর এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া স্যান ডিয়াগো’স স্কুল অফ মেডিসিন’য়ের গবেষকদের করা গবেষণায়।
গবেষকরা জানান, আপনার আশপাশের মানুষের মধ্যে যদি কিছু মানুষকে ধনী না হলেও সুখী আর সুস্থ দেখতে পান তবে হয়ত তারা জীবনের মানে খুঁজে পেয়েছে।
অনেকেই মনে করেন জীবনের মানে ও উদ্দেশ্য হচ্ছে দার্শনিক বিষয়। তবে জীবনের মানে খুঁজে পাওয়ার সঙ্গে ভালো থাকা পক্ষান্তরে বেশি দিন বেঁচে থাকার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
গত তিন দশক ধরে চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণায় জীবনের মানে খুঁজে পাওয়ার বিষটাকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। বিশেষ করে বয়স্ক জনসংখ্যার ক্ষেত্রে।
গবেষকরা জানান, সুস্থ ও ভালো থাকতে জীবনে মানে খোঁজা ও পাওয়ার মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। যদিও প্রাপ্তবয়স্ক, তরুণ এবং ষাটোর্ধের মধ্যে সেই সম্পর্কের রূপ ভিন্ন।
‘সেন্টার অফ হেলদি এইজিং সাইকিয়াট্রি অ্যান্ড নিউরোসায়েন্স’য়ের জ্যেষ্ঠ্ সহযোগী ডিন এবং জ্যেষ্ঠ্ গবেষক অধ্যাপক দিলিপ ভি জেস্ট বলেন, “যত বেশি জীবন অর্থবহ হবে ততই তৃপ্ত হতে থাকবেন। অন্যদিকে জীবনের যদি কোনো উদ্দেশ্য না থাকে তাহলে সেই খোঁজ বৃথা যাবে। ফলে বাড়বে অশান্তি।”
‘ক্লিনিকাল সাইকিয়াট্রি’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়, জীবনের মানে থাকা এবং খুঁজে পাওয়ার সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক ভাবে ভালো থাকার সম্পর্ক রয়েছে। অন্যদিকে জীবনের মানে খুঁজে যাওয়ার সঙ্গে সবচেয়ে বাজে মানসিক অবস্থা সম্পর্কিত।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে যখন বয়স ৬০ তখন জীবন অর্থবহ মানে থাকে চূড়ান্ত পর্যায়ে এবং জীবনের মানে খোঁজার বিন্দু থাকে সবচেয়ে নিচে।
জেস্ট বলেন, “যখন আপনি তরুণ, যেমন- বিশের ঘরে বয়স, তখন আপনি ‘ক্যারিয়ার’ নিয়ে নিশ্চিত থাকেন না, জীবন সঙ্গী কে হবে, নিজে কী হবেন- অর্থাৎ জীবনের মানে খুঁজতে থাকেন।”
“তারপর তিরিশের দিক থেকে চল্লিশ এবং পঞ্চাশের দিকে এগিয়ে যেতে থাকবেন, তখন আপনি অনেকটাই প্রতিষ্ঠিত, হয়ত বিয়েও করেছেন, পরিবার-সন্তান আছে। ফলে জীবনের মানে খোঁজার পরিমাণ কমে এবং জীবন হয় অর্থবহ।”
তবে ষাটের পরে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়। এই সময় মানুষ সাধারণত অবসরে যায়, ফলে নিজের পরিচয় হারাতে বসে।
এসময় স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে। কিছু বন্ধু বা পরিবারের অন্যান্য বয়স্ক সদস্যরা মারা যান।
আর এই সময় আবার তারা জীবনের মানে খোঁজা শুরু করেন। কারণ যে অর্থবহ জীবন তারা খুঁজে পেয়েছিলেন সেটাতে এসেছে পরিবর্তন।
তিন বছর ধরে করা এই গবেষণার জন্য স্যান ডিয়েগো কাউন্টি’র ২১ থেকে একশর বেশি বয়সি ১ হাজার ৪২ জনের ওপর পর্যবেক্ষণ করা হয়।
জীবনের অর্থ থাকা এবং খুঁজে পাওয়ার এই গবেষণার জন্য প্রশ্ন-উত্তর ভিত্তিক সাক্ষাৎকারের সাহায্য নেওয়া হয়। যেখানে অংশগ্রহণকারীরা উত্তর দেন মান নির্ণয়ের মাধ্যমে। যেমন ‘আমি জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজছি’ এবং ‘আমি জীবনের তৃপ্তিমূলক উদ্দেশ্য আবিষ্কার করেছি’।
গবেষণার প্রধান লেখক অ্যাওয়াইজ আফতাব বলেন, “জীবনের মানে বিষয়টা চিকিৎসাশাস্ত্রে চিহ্নিত করতে পেরেছে। চিকিৎসার সঙ্গে এটার সম্পর্ক রয়েছে এবং সম্ভাব্য পরিবর্তনীয় বিষয়। যা নির্দিষ্ট করে রোগীর ভালো থাকা বৃদ্ধি করবে।”
সূত্রঃ বিডিনিউজ