আমাদের রামু ডটকম প্রতিবেদক, চাঁদপুর:
স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের চাঁদপুরস্থ ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর (ডিএফ) নিকোলাস বিশ্বাস যুক্তরাজ্য ভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা “টিয়ারফাণ্ড” -এ রেসপন্স ম্যানেজার-বাংলাদেশ পদে শীঘ্রই যোগদান করতে যাচ্ছেন। এ পদে যোগদানের মাধ্যমে তিনি টিয়ারফাণ্ড -এর এশিয়া টিমের একজন সদস্য হবেন। এ ব্যাপারে তিনি সবার প্রার্থনা ও সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বর্তমানে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)’র সহায়তায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পে ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর (ডিএফ) হিসেবে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কার্যালয়ে কর্মরত আছেন। ২০১৭ সালের জানুয়ারি হতে আজ পর্যন্ত তিনি এখানে কাজ করছেন। ইতিমধ্যে তিনি তার বর্তমান কর্মস্থলের চাকুরীতে ইস্তফা দিয়েছেন এবং তার উপর অর্পিত যাবতীয় দায়-দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নিকোলাস বিশ্বাসের জন্ম গোপালগঞ্জ জেলার বানিয়ারচর গ্রামে। তিনি বানিয়ারচর নিবাসী তুফান ও শেফালী বিশ্বাসের ৩য় সন্তান। এ পর্যন্ত তিনি দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করেছেন। ২০০৮-২০০৯ সালে তিনি আফগানিস্থানে সেন্ট্রাল এশিয়া ডেভেলপমেন্ট গ্রূপ (সিএডিজি) কর্তৃক পরিচালিত রিকন্সট্রাক্টশন ও রিবিল্ডিং প্রোজেক্টে এ্যাডমিন ও রিপোর্টিং ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন।
বাংলাদেশের গণমাধ্যম-ভিত্তিক সংস্থা ’মাসলাইন মিডিয়া সেন্টার’ -এ তিনি প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তখন তিনি দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের গণমাধ্যম-কর্মীদের সাথে সরাসরি কাজ করেন। গণমাধ্যমে রিপোর্টিঙের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ঐ সময় বহু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছিল। বর্তমান পদে কাজ করার পূর্বে নিকোলাস বিশ্বাস বাংলাদেশের একটি অন্যতম জাতীয় পর্যায়ের উন্নয়ন সংস্থা ‘লাইট হাউস’ -এর কমিউনিটি লিগ্যাল সার্ভিসেস প্রকল্পে চাঁদপুরে আসার আগ পর্যন্ত টিম লিডার হিসেবে কাজ করেছেন।
দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করার পাশাপাশি তিনি লেখা-লেখির সাথে সম্পৃক্ত। ইতিমধ্যে তার অনূদিত ছয়খানা বই প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও তার বেশ কিছু প্রবন্ধ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। প্রসঙ্গতঃ লেখা-লেখির জন্য ২০০৭ ও ২০০৮ সালে পর পর দু’বার তিনি জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড -এ ভূষিত হন। প্রথমবার জাতীয় ইংরেজী দৈনিক ‘দি ডেইলি স্টার’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রবন্ধকে ‘ইউএনএফপিএ মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়। এরপর ’দি ডেইলি নিউ এজ’ পত্রিকায় প্রকাশিত আরেকটি প্রবন্ধকে জাতিসংঘ আবার ঐ মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড প্রদান করে। মিডিয়া এ্যাওয়ার্ড -এর পুরস্কার হিসেবে ছিল সম্মাননা ক্রেষ্ট, সনদপত্র এবং প্রাইজ মানির চেক।
নিকোলাস বিশ্বাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯৯৬ সালে ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ বিভাগ হতে মাষ্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। চাকুরী জীবনের পথ-পরিক্রমায় লেখা-লেখি এবং গণমাধ্যম ভিত্তিক ফ্রীল্যান্সিং তার ভালো লাগার একটি অন্যতম কাজ। তিনি তার এই ভালো লাগার কাজটি অব্যাহত রাখতে চান।
চাকুরীর এই নতুন সুযোগটির বিষয়ে নিকোলাস বিশ্বাস বলেন, এখানে আমি চুক্তি ভিত্তিক কাজ করছি। একটি চুক্তি শেষ হলে আরেকটির পর্ব শুরু হয়। এগুলো চ্যালেঞ্জিং মনে হলেও আমি এটা এনজয় করি। এবারের অফারটি আমার জন্য খুবই আকর্ষণীয়। বর্তমান চাকুরীতে যে পরিমাণ বেতন-ভাতা আছে তার চেয়ে এটি হবে প্রায় দ্বিগুণ। আমার চলমান চাকুরীর মেয়াদ এ মাসেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। নতুন এ চাকুরীর সুযোগটি আমার জন্য খুবই সুখকর। আমি মনে করি এবারের শুভ বড়দিন এবং নববর্ষ উপলক্ষ্যে এটা আমার জন্য একটি অপূর্ব উপহার। এজন্য মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।।