ক্রীড়া ডেস্কঃ
বাংলাদেশের ক্রিকেটে তিনটি কথা সবচেয়ে বেশি শোনা যায়, উচ্চারিত হয়। প্রথমতঃ জেনারেশন তৈরি করতে হবে। পাইপ লাইন বাড়াতে হবে। জাতীয় দলের বাইরে এক ঝাঁক মেধাবি, দক্ষ ও তরুণ ক্রিকেটারকে তৈরি রাখতে হবে। দুই. ভাল উইকেটে ঘরোয়া আসরগুলোর আয়োজন করতে হবে। তিন. দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেট চর্চা বাড়ানোর পাশাপাশি মানও বাড়াতে হবে।
এমন নয়, কথাগুলো নতুন। সাম্প্রতিক সময়ের। তা নয় একদমই। সেই ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর থেকেই শোনা যাচ্ছে। বার বার শতবার সহস্রবার উচ্চারিত কথন; কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, সেগুলো মুখে মুখেই থেকে গেছে। সে অর্থে বাস্তব রুপ পায়নি।
বাংলাদেশে এখনো কোন জেনারেশন গড়ে ওঠেনি। সেই ‘পঞ্চ পান্ডব’ তথা মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরাই এখনো বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রধান চালিকাশক্তি। এখনো ম্যাচ জিততে, ভাল খেলতে আর লড়াই-সংগ্রামে ওই পাঁচ সিনিয়রই মূল ভরসা।
বিচ্ছিন্ন কিছু প্রতিভা যে উঠে আসেনি, তা নয়। এসেছে। তবে তারা যে সময়ের সাথে নিজেদের তৈরি করে সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে একদম ওপরে উঠবেন, তা হয়নি। সৌম্য, লিটন, সাব্বির, মোসাদ্দেক, মিরাজ, তাসকিন, মোস্তাফিজ- কেউই আসলে সেই মানে পৌঁছাতে পারেননি।
তাই সে অর্থে প্রজন্ম তৈরির কাজ হয়নি। এখনো প্রচুর শূন্যতা। ভাল উইকেট তৈরি, স্পোর্টিং পিচ নির্মাণ এবং কোয়ালিটি উইকেটে খেলা আয়োজন সম্ভব হয়নি এখনো। বেশিরভাগই ‘তক্তা’ পিচে খেলা হয়। যেখানে ব্যাটসম্যানরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েও রান করেন। বোলারদের করণীয় কিছু থাকে না বললেই চলে।
আর দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেট মানে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের স্ট্যান্ডার্ডও বাড়ানো সম্ভব হয়নি। টেস্টের পূর্বশর্ত, যে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট, তা সমৃদ্ধ করা, নতুন প্রজন্মকে দীর্ঘ পরিসরের খেলায় উৎসাহিত-অনুপ্রাণিত করার কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
সব মিলে দেশের ক্রিকেটে সর্বাধিক উচ্চারিত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কথার বাস্তবায়ন সে অর্থে হয়নি। তবে আশার কথা, এবার দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটকে সমৃদ্ধ ও আকর্ষণীয় করার উদ্যোগের কথা শোনা যাচ্ছে।
পরের প্রজন্ম যাতে দীর্ঘ পরিসরের খেলায় হাত পাকিয়ে উঠে তারপর জাতীয় দলে ঢোকে, সেই চিন্তা থেকেই এবার থেকে জাতীয় লিগ আর বিসিএলের পাশাপাশি অনূর্ধ্ব-২৩ বয়সী ক্রিকেটারদের জন্যও বিসিএলের মত তিনদিনের আসর আয়োজনের শুরুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
রোববার বিকেলে জাগো নিউজের সাথে আলাপে এ তথ্য দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। তিনি জানান, ‘পরবর্তী প্রজন্মকে দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে উৎসাহিত করতে বিসিএলের মত ফ্র্যাঞ্চাইজি টাইপ তিন দিনের দীর্ঘ পরিসরের টুর্নামেন্ট খেলানোর চিন্তা ভাবনা করা হয়েছে এবং সেটা বোর্ডে প্রস্তাব আকারে যাবে। যাতে আগামীতে যুব দলের খেলা শেষ করে অনূর্ধ্ব-২৩ এর ক্রিকেটাররা বিসিএলের মত ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক তিনদিনের টুর্নামেন্ট খেলতে পারে।’
সূত্রঃ জাগোনিউজ