ক্রীড়া ডেস্কঃ
এই তো গত বছরের শেষ দিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ আয়োজন করে মাশরাফিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় দিতে চেয়েছিল বিসিবি। মাশরাফি বোর্ডের কাছ থেকে ভাবার জন্য সময় চেয়ে নিয়েছিলেন। ফেব্রুয়ারি মাসে আরেকটি জিম্বাবুয়ে সিরিজ, আবারও আলোচনায় মাশরাফির বিদায় প্রসঙ্গ।
শুক্রবার বিপিএলে ঢাকা প্লাটুন ও রংপুর রেঞ্জার্সের ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এলেন ঢাকার অধিনায়ক। সেখানেই জানতে চাওয়া হলো জাতীয় দল থেকে বিদায় নিয়ে কী ভাবছেন? কূটনৈতিক উত্তর দিয়েছিলেন এই প্রশ্নের। এর পরও যখন প্রশ্ন হতে থাকল, তখন নীরবতা ভাঙেন নড়াইল এপপ্রেস। ওয়ানডে অধিনায়ক জানান, অবসর নিতে চান না তিনি। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটটা চালিয়ে যেতে চান যতদিন মনে জোড় পাবেন।
মাশরাফির নেতৃত্বে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ খেলে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে বোলার মাশরাফির কঠিন সময় গেছে। ৫৬ ওভার বল করে ৩৬১ রান খরচায় একটি উইকেট শিকার করেন। বিশ্বকাপ-পরবর্তী শ্রীলংকা সিরিজে যেতে পারেননি ইনজুরির কারণে। এরপর আর ওয়ানডে খেলেনি বাংলাদেশ। মাশরাফিরও তাই খেলা হয়নি। প্রতিযোগিতামূলক খেলায় ফিরেছেন বিপিএল দিয়ে। ফেব্রুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ খেলার কথা টাইগারদের। এই সিরিজকে কেউ কেউ মাশরাফির বিদায়ী সিরিজও মনে করছেন। তবে নড়াইল এক্সপ্রেস দেখছেন অন্যভাবে। জাতীয় দলের হয়ে খেলার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন তিনি, ‘জিম্বাবুয়ে সিরিজে আমাকে বলা হয়েছিল, তখনও বলেছি আমি খেলব। বোর্ড যদি মনে করে আমাকে খেলাতে চায়, অবশ্যই আমি আছি।’
বঙ্গবন্ধু বিপিএলেও খুব একটা ছন্দে নেই ঢাকার অধিনায়ক মাশরাফি। গত কিছুদিন ক্রিকেটে ঘটে যাওয়া কিছু বিষয় নাড়া দিয়ে গেছে তাকে। শক কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে আরও কিছুটা সময় হয়তো লাগবে তার। তবে খেলার মাঠে একবার সিরিয়াস হলে জীবন বাজি রেখেও খেলেন নড়াইল এক্সপ্রেস। সুযোগ দিলে চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত তিনি। যদিও কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে অপেক্ষা করছেন জাতীয় দল নির্বাচকদের সিদ্ধান্তের জন্য, ‘নির্বাচনের একটা ব্যাপার। আট ম্যাচে ১ উইকেট পাওয়ার পর তো আমি দলে জায়গা প্রত্যাশা করতে পারি না সত্যি কথা বললে। নির্বাচকরা যদি মনে করেন আমাকে সুযোগ দেবেন, আমি আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। এ মুহূর্তে আমি আট ম্যাচে (বিশ্বকাপ) ১ উইকেট পেয়ে কীভাবে বলি, আমি জাতীয় দলে সুযোগ পাব। অন্য কেউ হলে অবশ্যই আরও আগে বাদ হতো।’
তবে জাতীয় দলে না হলেও আপত্তি নেই মাশরাফির। বিপিএল ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলা চালিয়ে যেতে চান তিনি। অভিমান থেকেই হয়তো এই আবেগী বক্তব্য নড়াইল এক্সপ্রেসের। তার অভিমানী হওয়ার কারণও আছে। তিনি যে বিদায়ের কথা শুনে শুনে ক্লান্ত, ‘অবসর সবাই করিয়ে দিয়েছে। আমি নিজেও হয়তো যে জায়গায় অবস্থান করছি, সেটাকেও উপভোগ করছি। মাঠ থেকে অবসর নেব কি নেব না, সেটা এখনও সিদ্ধান্ত নেইনি। যদি সে রকম অবস্থা তৈরি হয়, ক্রিকেট বোর্ড যদি মনে করে, তাহলে হয়তো বা চিন্তা-ভাবনা করব।’
কথার বাঁধন আলগা হওয়ায় নিজেকে ছাড়িয়ে মুস্তাফিজের হয়েও বোলিং করলেন মাশরাফি। জাতীয় দল নির্বাচক হাবিবুল বাশারকে এক হাত নিলেন মুস্তাফিজের সমালোচনা করায়। টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন, ‘আমি যখন মুস্তাফিজের দায়িত্বে আছি তখন আমি কেন মুস্তাফিজকে নিয়ে আপনাদের সামনে সমালোচনা করব। তখন আমি মুস্তাফিজকে আরও আগলে রাখার চেষ্টা করব। আমাকে অর্ধেক মুস্তাফিজকে দেখান বাংলাদেশে। মুস্তাফিজ বিশ্বকাপে ২১ উইকেট পেয়ে আসছে। হয়তো ইকোনমি নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। পৃথিবীর অনেক বোলার আছে, যারা ফর্মহীনতায় আছে। মুস্তাফিজ কি মানুষ না? মুস্তাফিজ তার মনের যে সমস্যা, সেটা তার সঙ্গে আর কীভাবে শেয়ার করবে।’
সূত্রঃ সমকাল