ক্রীড়া ডেস্কঃ
সাত দলের অংশগ্রহণে ৩৭ দিনের জমজমাট লড়াই শেষে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের শিরোপা জিতেছে আন্দ্রে রাসেলের রাজশাহী রয়্যালস। শুক্রবারের ফাইনাল ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে ২১ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রাজশাহীর কোনো দল। একইসঙ্গে প্রথমবারের মতো শিরোপা উঠেছে কোনো বিদেশি অধিনায়কের হাতে।
অথচ টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ, সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস, ম্যাচে সেরা বোলিং, সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক অথবা সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী- কোনো তালিকাতেই শীর্ষে নেই রাজশাহীর কোনো খেলোয়াড়। মূলত দলের সবার সম্মিলিত পারফরম্যান্সে ভর করেই নিজেদের প্রথম শিরোপা জিতে নিয়েছে রাসেলের রাজশাহী।
আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছে খুলনা টাইগার্সের রাইলি রুশো, সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস খুলনা টাইগার্সের নাজমুল হোসেন শান্ত, ম্যাচে সেরা বোলিং ফিগারও খুলনা টাইগার্সের মোহাম্মদ আমির, সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী রংপুর রেঞ্জার্সের মোস্তাফিজুর রহমান, সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের।
তবে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন রাজশাহী রয়্যালসের অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল। একনজরে দেখে নেয়া যাক বঙ্গবন্ধু বিপিএলের যত পরিসংখ্যান:
আসরের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ
১. চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স – ২৩৮/৪ বনাম কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স
২. সিলেট থান্ডার – ২৩৫/৫ বনাম খুলনা টাইগার্স
৩. কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স – ২২২/৭ বনাম চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স
৪. চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স – ২২১/৪ বনাম ঢাকা প্লাটুন
৫. খুলনা টাইগার্স – ২১৮/২ বনাম কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স
সবমিলিয়ে এবারের আসরে দুইশর ওপরে দলীয় সংগ্রহ হয়েছে মোট ৮টি। সমান ২ বার করে দুইশর বেশি রান করেছে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও খুলনা। এছাড়া একটি ম্যাচে ১৯৯ রানে থেমেছে খুলনার ইনিংস।
আসরের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ
১. নাজমুল হোসেন শান্ত (খুলনা টাইগার্স) – ৫৭ বলে অপরাজিত ১১৫ (৮ চার ও ৭ ছয়), বনাম ঢাকা প্লাটুন
২. আন্দ্রে ফ্লেচার (সিলেট থান্ডার) – ৫৭ বলে অপরাজিত ১০৩ (১১ চার ও ৫ ছয়), বনাম খুলনা টাইগার
৩. ডেভিড মালান (কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স) – ৫৪ বলে অপরাজিত ১০০ (৯ চার ও ৫ ছয়), বনাম রাজশাহী রয়্যালস
৪. মুশফিকুর রহীম (খুলনা টাইগার্স) – ৫৭ বলে অপরাজিত ৯৮ (১২ চার ও ৩ ছয়), বনাম কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স
৫. ভানুকা রাজাপাকশে (কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স) – ৬৫ বলে অপরাজিত ৯৬ (৪ চার ও ৭ ছয়), বনাম ঢাকা প্লাটুন
এছাড়া মুশফিকুর রহীম ৯৬, মুমিনুল হক ৯১ ও জনসন চার্লস ৯০ রানে আউট হয়েছিলেন।
আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক
১. রাইলি রুশো (খুলনা টাইগার্স) – ১৪ ম্যাচে ৪৫.০০ গড়ে ৪৯৫ রান, সর্বোচ্চ ৭১*
২. মুশফিকুর রহীম (খুলনা টাইগার্স) – ১৪ ম্যাচে ৭০.১৪ গড়ে ৪৯১ রান, সর্বোচ্চ ৯৮*
৩. লিটন দাস (রাজশাহী রয়্যালস) – ১৫ ম্যাচে ৩২.৫০ গড়ে ৪৫৫ রান, সর্বোচ্চ ৭৫
৪. শোয়েব মালিক (রাজশাহী রয়্যালস) – ১৫ ম্যাচে ৩৭.৯১ গড়ে ৪৫৫ রান, সর্বোচ্চ ৮৭
৫. ডেভিড মালান (কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স) – ১১ ম্যাচে ৪৯.৩৩ গড়ে ৪৪৪ রান, সর্বোচ্চ ১০০*
এছাড়া ৪০০’র বেশি রান করা অন্য ব্যাটসম্যান হলেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস। ১৩ ম্যাচে ৪৯.১১ গড়ে ৪৪২ রান করেছেন তিনি।
আসরের সর্বোচ্চ ছক্কা
১. রাইলি রুশো (খুলনা টাইগার্স) – ১৪ ম্যাচে ২৩ ছক্কা
২. ইমরুল কায়েস (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স) – ১৩ ম্যাচে ২২ ছক্কা
৩. আন্দ্রে রাসেল (রাজশাহী রয়্যালস) – ১৩ ম্যাচে ২১ ছক্কা
৪. জনসন চার্লস (সিলেট থান্ডার) – ১১ ম্যাচে ২০ ছক্কা
৫. চ্যাডউইক ওয়ালটন (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স) – ১৪ ম্যাচে ২০ ছক্কা
ম্যাচে সেরা বোলিং ফিগার
১. মোহাম্মদ আমির (খুলনা টাইগার্স): ৪-০-১৭-৬ বনাম রাজশাহী রয়্যালস
২. ওয়াহাব রিয়াজ (ঢাকা প্লাটুন): ৩.৪-১-৮-৫ বনাম রাজশাহী রয়্যালস
৩. রবি ফ্রাইলিংক (খুলনা টাইগার্স): ৪-১-১৬-৫ বনাম কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স
৪. থিসারা পেরেরা (ঢাকা প্লাটুন): ৪-০-৩০-৫ বনাম কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স
৫. মুজিব উর রহমান (কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স): ৪-০-১২-৪ বনাম সিলেট থান্ডার
আসরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী
১. মোস্তাফিজুর রহমান (রংপুর রাইডার্স) – ১২ ম্যাচে ২০ উইকেট, সেরা বোলিং ১০ রানে ৩ উইকেট (গড় ১৫.৬০)
২. মোহাম্মদ আমির (খুলনা টাইগার্স) – ১৩ ম্যাচে ২০ উইকেট, সেরা বোলিং ১৭ রানে ৬ উইকেট (গড় ১৭.৭৫)
৩. রুবেল হোসেন (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স) – ১৩ ম্যাচে ২০ উইকেট, সেরা বোলিং ১৭ রানে ৩ উইকেট (গড় ১৭.৮৫)
৪. রবি ফ্রাইলিং (খুলনা টাইগার্স) – ১৪ ম্যাচে ২০ উইকেট, সেরা বোলিং ১৬ রানে ৫ উইকেট (গড় ১৯.৬০)
৫. শহীদুল ইসলাম (খুলনা টাইগার্স) – ১৩ ম্যাচে ১৯ উইকেট, সেরা বোলিং ২৩ রানে ৪ উইকেট (গড় ২০.৮৪)
আসরের সর্বোচ্চ ক্যাচ
১. রাইলি রুশো (খুলনা টাইগার্স): ১৪ ইনিংসে ১১ ক্যাচ
২. আন্দ্রে রাসেল (রাজশাহী রয়্যালস): ১৩ ইনিংসে ১০ ক্যাচ
৩. শোয়েব মালিক (রাজশাহী রয়্যালস): ১৫ ইনিংসে ৯ ক্যাচ
৪. আফিফ হোসেন (রাজশাহী রয়্যালস): ১৫ ইনিংসে ৮ ক্যাচ
৫. লুইস গ্রেগরি (রংপুর রেঞ্জার্স): ১১ ইনিংসে ৭ ক্যাচ
আসরের সর্বোচ্চ রানের জুটিগুলো
১. মেহেদি হাসান মিরাজ ও মুশফিকুর রহীম (খুলনা টাইগার্স) – ১৬৮* বনাম কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স
২. মুমিনুল হক ও মেহেদি হাসান (ঢাকা প্লাটুন) – ১৫৩ বনাম খুলনা টাইগার্স
৩. আন্দ্রে ফ্লেচার ও জনসন চার্লস (সিলেট থান্ডার) – ১৫০ বনাম খুলনা টাইগার্স
৪. নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদি হাসান মিরাজ (খুলনা টাইগার্স) – ১১৫ বনাম সিলেট থান্ডার
৪. শোয়েব মালিক ও রবি বোপারা (রাজশাহী রয়্যালস) – ১০৬ বনাম খুলনা টাইগার্স
সূত্রঃ জাগোনিউজ