এম. ফজলুল করিম:
১৯৯ টি বেসরকারী কলেজ সরকারি করণ ঘোষণার পর থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বিগত ১৭ ও ১৮ জুলাই আমি ঢাকা অবস্থান করেছিলাম। ঢাকার বিভিন্ন্ আবাসিক হোটেল গুলোতে বিভিন্ন্ কলেজের অধ্যক্ষবৃন্দের ভিড় দেখা গেছে। একদিকে জাতীয়করণ ভূক্ত কলেজের অধ্যক্ষ সাহেবগণ আছেন, অপরদিকে জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়া প্রবীণতম কলেজের অধ্যক্ষগণও রয়েছেন। জাতীয়করণের তালিকাভূক্ত অধ্যক্ষগণ তাঁদের কলেজকে জাতীয়করণের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে তদবিরে রত আছে। বাদ পড়া কলেজ গুলোর অধ্যক্ষগণ তাঁদের দু:খ ভরা মনে কলেজ জাতীয়করণের জন্য যেকোন ফাক্-ফোকর খুঁজছেন।
বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন্ অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়া গুলোতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায় সরকারি কলেজের তালিকায় নাম থাকা নিয়ে বিক্ষোভ
মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা ইত্যাদির খবর ছাপানো অব্যাহত রয়েছে। ১৮ জুলাই/১৬ প্রকাশিত ”বাংলাদেশ প্রতিদিন’’ পত্রিকায় (খোলা কলামে) ”উপজেলা পর্যায়ে কলেজ সরকারীকরণ ও শিক্ষার মান” শিরোনামের লিখাটিতে শত রকমের জাতীয়করণ সংক্রান্ত যৌক্তিক কথা বার্তা বলা হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী ডঃ খোন্দকার মোশারফ হোসেন, সাবেক অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, ভূতত্ত্ব বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর লিখিত কলামে।
২০ জুলাই ১৬ প্রথম আলো পত্রিকার ১ম পৃষ্ঠায় (নিজস্ব প্রতিবেদক) এর বরাত দিয়ে ১৯৯টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা নিয়ে ”যেনতেন কলেজ জাতীয়করণ হচ্ছে’’ নন্ এম.পি.ও ভূক্ত কলেজ, পাঠদানের অনুমতি প্রাপ্ত কলেজ, খুব কম বয়সী কলেজ, জাতীয়করণের তালিকাভূক্ত হয়েছে। একাডেমিক স্বীকৃতি নেই বা পায়নি এমন অনেক কলেজও জাতীয়করণের তালিকাভূক্ত হয়েছে।
জাতীয়করণের তালিকাভূক্ত কুষ্টিয়ার ১টি কলেজ। কলেজটির যোগ্যতা ২০১৪ সালে এইচ.এ.সি পরীক্ষায় অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২ জন এবং অংশগ্রহণ করা ২ জন পরীক্ষার্থীই ফেল করেছে। পরবর্তীতে, ২০১৫ সালে একই পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১ জন পরীক্ষার্থী এইচ.এ.সি পাশ করে। অর্থাৎ নামের কারণে উক্ত কলেজটিও জাতীয়করণের তালিকাভূক্ত হয়েছে। এধরণের অহরহ কলেজের নাম কিংবা নেতৃবৃন্দের তদবিরের কারণে অন্যায় ভাবে জাতীয়করণের তালিকাভূক্ত হয়েছে।
বিভিন্ন্ রিপোর্ট, প্রতিবেদন, বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন এর খবর পত্রিকায় দেখে আমি এবং কলেজ পরিবার চিন্তা করে সিন্ধান্ত নিয়েছি উখিয়া কলেজ স্থাপিত-১৯৯১ সালে এর নাম পরিবর্তন করে ”জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ” উখিয়া, করার জন্য। কারণ শুধুমাত্র নামই যদি যোগ্যতার মানদন্ড হয়! তাহলে আজ থেকে উখিয়া কলেজ এর নাম হবে, “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ” উখিয়া। উখিয়া কলেজের মত প্রবীণতম, জৈষ্ঠ, সমৃদ্ধ কলেজ গুলোকে জাতীয়করণের তালিকাভূক্ত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক দেশ ও জাতির শিক্ষা ব্যবস্থার উন্ন্য়ন ঘটানো হউক। একই সাথে ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত সমৃদ্ধ কলেজটি উল্লেখিত নতুন নামে সরকারীকরণের তালিকাভুক্ত করে অত্র জনপদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হউক। এতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সম্প্রসারণ নীতির দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। অত্র জনপদের শিক্ষা দ্রুত এগিয়ে যাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
শুধু নামই যদি যোগ্যতার মানদন্ড হয়, আমাদের নতুন স্বীকৃত “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ” উখিয়া, নামে জাতীয়করণের অন্তর্ভূক্ত করা হউক।
প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত ’’যেনতেন কলেজ জাতীয়করণ হচ্ছে”। এ বিষয়ে বি.সি.এস (শিক্ষা) ক্যাডার সমিতির কর্তাব্যাক্তিরাও বিরোধীতার সুর প্রকাশ
করেছেন। কারণ এমন অনেক কলেজ আছে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ করেছে। কোন যোগ্যতা বিচার না করে ইচ্ছে মতো,
স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারাও বি.সি.এস (শিক্ষা) ক্যাডারের সাথে সুর মেলাতে চেষ্টা করবে।
বর্তমানে সারাদেশে অযোগ্য, শর্তপূরণহীন, নন্ এম.পি.ও ভুক্ত, শুধু পাঠদানের অনুমতি প্রাপ্ত, এ জাতীয় অনেক কলেজ জাতীয়করণের তালিকা ভুক্ত
হয়েছে। এতে শিক্ষার সম্প্রসারণ তো দূরের কথা, শিক্ষার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি অনেক বেশি, আমি ব্যাক্তিগত তাই মনে করি। সব কিছু বাদ দিয়ে আমার
এবং আমাদের দাবী- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দক্ষিণ কক্সবাজারের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত একমাত্র সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ উচ্চ মাধ্যমিক
(বিজ্ঞান, ব্যবসায়, মানবিক), সমমানের বি.এম, স্নাতক (পাশ), ৪ বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে অধ্যয়নরত পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী, মানব সম্পদ, খেলাধুলার
মাঠ, একাডেমিক ভবন, কলেজের চতুর্দিকে সীমানা প্রাচীর, আরকান সড়ক সংলগ্ন কলেজ গেইট এবং সংলগ্ন মসজিদ সহ সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থায় অন্যতম “উখিয়া কলেজ” কে “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ” উখিয়া, নামে হলেও জাতীয়করণের তালিকাভুক্ত করা হউক। ফলে, অত্র জনপদের পিছিয়ে থাকা শিক্ষা দ্রুত সম্প্রসারণ হবে ইনশাল্লাহ।
লেখক : অধ্যক্ষ, উখিয়া কলেজ, ইমেইল : [email protected]