আল মাহমুদ ভূট্টো,রামুঃ
শখের বশে বাড়ির ছাদে ফল ও সবজির বাগান করেছেন সুলাল বড়ুয়া। রামুর পশ্চিম মেরংলোয়া বড়ুয়া পাড়া সীমা মহাবিহার সংলগ্ন তার বাড়ির ছাদে শোভা পাচ্ছে তার শখের বাগান। ছাদে বাগান করে তিনি যেমন আনন্দ পাচ্ছেন; তেমনি বিশুদ্ধ ও বিষমুক্ত শাক-সবজি ও ফল পাচ্ছেন। সুলাল বড়ুয়া নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন। কৃষক ও সাধারণ মানুষকে কৃষি বিষয়ে পরামর্শ এবং কৃষি কাজে উদ্বোদ্ধ করতে করতে তার মনে ছাদে বাগান করার শখ জাগে। অভিজ্ঞতা এবং প্রশিক্ষনলব্ধ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে তিনি গড়ে তোলেন এ শখের বাগান। এতে তার ভবনেরও কোন ধরনের ক্ষতি হচ্ছে না এবং পরিবেশ সংরক্ষণের পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা মিটাচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বারশ বর্গফুটের উপর নির্মিত সুন্দর একটি বাড়ি। দোতলার ছাদ বেশ ছিমছাম, সাজানো গোছানো একটি বাগান। সেখানে লাগানো হয়েছে দূর্লভ প্রজাতির ফল, ফুল, সবজি ও মসলা জাতীয় গাছ। মাটি, গোবর এবং জৈব সার ব্যবহার করে ড্রাম ও টবে পরম যতেœ গাছগুলো লাগিয়েছেন তিনি। আমড়া, পেঁপে, ডালিম, সফেদা, লেবুসহ বিভিন্ন ধরনের ফল গাছে শোভা পাচ্ছে কাঁচা- পাকা ফল। কমলা, মাল্টাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছে ফুল দেখা যাচ্ছে। গাছে ঝুলছে বেগুন, মরিচ। পরিপাটি ছাদে তৈরি করা মাচায় ঝুলছে কড়লা। পোকা দমনে ব্যবহার করা হয়েছে ফেরোমন ফাঁদ।
তিনি জানান, বারমাসি থাই, আ¤্রপালি, চোষা, হাড়ি ভাঙা ও ল্যাংড়া জাতের আম, বারি কমলা, বারি মাল্টা, সফেদা, ডালিম, সীডলেস লেবু, এলাচি লেবু, লিচু, থাই পেয়ারা, বাউকুল, আপেল কুল, ড্রাগন ফ্রুট, মিষ্টি করঞ্চা, বারমাসি আমড়া, ওপি নারিকেল, পেঁপেসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের গাছ, সবজি ও মসলা জাতীয় গাছের মধ্যে কড়লা, বেগুন, মরিচ. ধনিয়া, হলুদ, আদা, গোল মরিচ, তেজপাতাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। তিনি দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দূর্লভ প্রজাতির উচ্চ ফলনশীল জাতীয় এসব চারা সংগ্রহ করেছেন।
বাগানের মালিক উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুলাল বড়ুয়া জানান, বাড়ির ছাদকে ফেলে না রেখে বিভিন্ন ধরনের শাক- সবজি ও ফলের আবাদ করা সম্ভব। কৃষি বিভাগে এবং কৃষকদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে নিজের বাড়ির ছাদেও বাগান করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। মাটি, গোবর এবং জৈব সার ব্যবহার করে ড্রাম ও টবে পরম যত্নে গাছগুলো লাগিয়েছেন তিনি। এতে ছাদেরও কোন ক্ষতি হচ্ছে না। চাকরির পাশাপাশি যেটুকু সময় পান তিনি এ বাগানেই কাটান। বাগানের প্রত্যেকটা গাছকে তিনি নিজের সন্তানের মতই যত্ন করেন। ছাদে বাগান করে তিনি যেমন মনের আনন্দ মিটাচ্ছেন তেমনি বিশুদ্ধ শাক-সবজি ও ফল পাচ্ছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট এবং কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে জানা যায়। দিন দিন ছাদ বাগানের প্রতি ঝুঁকছে মানুষ। জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ছাদ বাগান। এতে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বাড়ির চাহিদা মিটিয়ে শাক, সবজি ও ফলমূল উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হচ্ছে। অনেকে শখের বশেও ছাদ বাগান করছে।