খালেদ শহীদ রামুঃ
বিশ্ব আতংক করোনা ভাইরাস সংক্রমন, নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে রামুতে ৫০ শয্যার আইসোলেশন ও কোয়েরেন্টাইন ইউনিট স্থাপনা করা হয়েছে। কক্সবাজারে বসবাসরত কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সনাক্ত হলেই, রামু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষ ব্যবস্থায় করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। নবনির্মিত রামু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনতলা ভবনের ২০টি কেবিনে ও তিনটি ওয়ার্ডে করোনা ভাইরাস (ঈঙঠওউ-১৯) আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে আইসোলেশন ও কোয়েরেন্টাইন ইউনিট, প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসা সামগ্রী ও মাস্ক-পিপিই মজুদ রাখা হয়েছে। সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে আইসোলেশন কমিটি, জরুরী রেসপন্স টীম এবং কন্ট্রোল রুম।
বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) দুপুরে নবনির্মিত রামুতে ৫০ শয্যার আইসোলেশন ও কোয়েরেন্টাইন ইউনিট পর্যবেক্ষণকালে সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান, রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রামু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল, রামু প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি খালেদ শহীদ, উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক নীতিশ বড়ুয়া, রামু রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সাবেক সভাপতি সোয়েব সাঈদ, সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক দর্পণ বড়ুয়া ও আজম খান, রামু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কম্পিউটার অপারেটর দিপঙ্কর বড়ুয়া ধীমান।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে গত ৪ মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্তে কক্সবাজারের রামুতে নবনির্মিত ৫০ শয্যার হাসপাতালটি উদ্বোধনের আগেই জরুরী ভিত্তিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমন, নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে আইসোলেশন ও কোয়েরেন্টাইন ইউনিট স্থাপনা করা হয়েছে বলে জানিয়ে ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া বলেন, বিশে^ এখন অন্যতম আতংক করোনা ভাইরাস। বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রাণী থেকে মানুষের দেহে আসে এই ভাইরাস। মানুষ থেকে মানুষের দেহে ছড়ায় এই ভাইরাস। নিয়মিত মুখ-হাত ধোয়া অভ্যাস করতে হবে। বিদেশ থেকে যারা আসবেন, তাদের বিষয়েও সর্তক থাকতে হবে আমাদের। প্রবাসীদের অন্তত ১৪ দিন পর্যবেক্ষনে থাকতে হবে। করোনা ভাইরাস বিষয়ে আমাদের সকলকে সর্তক থাকবে হবে।
বুধবার বিকালে জরুরী ভিত্তিতে রামুতে ৫০ শয্যার আইসোলেশন ও কোয়েরেন্টাইন ইউনিট পরিদর্শন করেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। এ সময় তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে অহেতুক আতংকিত হবে না। আমাদের প্রত্যেককে এ ব্যাপারে সর্তক থাকতে হবে এবং তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান করার আহ্বান জানিয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে কেউ গুজব ছড়ালে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ সময় কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা, রামু থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি কক্সবাজার স্বাস্থ্য বিভাগে আয়োজিত এক সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষনা) ডা. ইকবাল কবীরের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া বলেন, কক্সবাজার জেলায় রোহিঙ্গাদের কারণে অনেক বিদেশীর অবস্থান করছেন। তাই কক্সবাজার জেলাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। যারা চীন, ইতালি, হংকং, ইরান থেকে আসবে, তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য অবশ্যই আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হবে। ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া বলেন, মুখে মাক্স ব্যবহার করার চেয়ে নিয়মিত হাতমুখ ধোয়া ও নিজকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে ব্যক্তিগত পরিচর্যায় রাখতে হবে।