অনলাইন ডেস্কঃ
নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমনকি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যেও স্কুল-কলেজ বন্ধ করা হলেও বাংলাদেশে এখনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার সিদ্ধান্তেই আছে সরকার।
রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখবে না খোলা রাখবে, এটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিষয়।”
বিকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার বিষয়ে এখনও শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
“শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে সবাইকে অভিহিত করা হবে।”
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার কোনো খবরে বিভ্রান্ত না হতেই সবাইকে অনুরোধ জানান এই কর্মকর্তা।
আড়াই মাস আগে চীনে সংক্রমণ ঘটার পর বিশ্বের শতাধিক দেশের লাখো মানুষ আক্রান্ত এবং ৫ হাজারের বেশি মৃত্যুর পর বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে।
ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশেও গত কয়েকদিনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি কমে গেছে। ক্যাম্পাস বন্ধের দাবি উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও।
বাংলাদেশে এখনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘বন্ধের মতো পরিস্থিতি হয়নি’ বলে সরকার মনে করলেও বন্ধের গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম রোগী ধরা পড়ার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আপাতত স্বাভাবিকভাবেই চালিয়ে যাওয়া হবে।
আর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছিলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে হলে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতেই তা নেওয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করা হবে কি হবে না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন।
রোববার এক সভার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, “আজকের সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবরা ছিলেন। তাদের আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যান্ড ওয়াশের ব্যবস্থা করার জন্য বলেছি।
“ছাত্রছাত্রীরা যে টেবিল-চেয়ার ব্যবহার করে স্কুল ছুটির পর সেগুলো পরিষ্কার ও জীবণুমুক্ত করে রাখতে বলেছি।”
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়েকে সুপারিশ করবেন কি না- এই প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই সিদ্ধান্ত তো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের না, এই সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয় নেবে। তবে নিরাপত্তাজনিত যা যা বিষয় রয়েছে আমরা আজকেও তাদের অবহিত করেছি।
“আমরা সতর্কতা অবলম্বনের জন্য বলছি। আমাদের পরামর্শ যতটুকু যা দেওয়ার সেটা আমরা দিয়েছি। আমরা বাংলাদেশের মানুষকে নিরাপদ রাখতে চাই, সেজন্য কাজ করছি। আমরা কারও উপর কিছু চাপিয়ে দিতে পারব না।”
সূত্রঃ বিডিনিউজ