খালেদ শহীদ, রামুঃ
রামুতে বিয়ের তিন মাসের মধ্যে আপন চার ভাইয়ের হাতে খুন হলো আরেক ভাই। কক্সবাজারের রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের মনিরঝিল সোনাইছড়ি এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটে বলে জানা গেছে। নিহত কৃষক গোলাম কাদের (৩২) রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের পশ্চিম মনিরঝিল পশ্চিম পাড়ার মৃত আবদুল হাসিমের ছেলে। কৃষক গোলাম কাদের হত্যার ঘটনায় তারই আপন চার ভাই আবদুর রহিম, আবদুর রহমান, আবদুর রহিম ও আবদুন্নবী জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পেয়েছেন বলে জানান, রামু থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের।
পুলিশ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে নিহত গোলাম কাদেরের মরদেহ উদ্ধার করেছে। পরে ওই হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করার পর, নিহতের মরদেহ বুধবার দুপুরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত পলাতক ভাইদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) দুপুর ১২টা-১টার দিকে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে আপন চার ভাই মিলে গালাম কাদেরের উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় গোলাম কাদের গুরুতর আহত হয়। মুমূর্ষ গোলাম কাদেরকে হামলাকারী চার ভাই মিলে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে গোলাম কাদেরের মৃত্যূ নিশ্চিত হলে, তারা ওই স্থান সরে পড়ে।
কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মেম্বার ওই এলাকার বাসিন্দা জহির উদ্দিন জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধেই আপন ভাইদের হাতে খুন হলো কৃষক গোলাম কাদের। স্থানীয় মৃত আবদুল হাসিমের ছয় ছেলের মধ্যে চতুর্থ ছেলে নিহত গোলাম কাদের। স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতকারীর যোগসাজসে বড় ভাই সৌদি প্রবাসী ওসমান গণি, মেঝ ভাই আবদুর রহমান, ছোট দুই ভাই আবদুর রহিম ও আবদুন্নবী এ হত্যাকান্ড ঘটায়। তিনি আরো জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিহত গোলাম কাদেরের ভাই আবদুন্নবী পার্শবর্তী রাজারকুল ইউনিয়নের পূর্ব রাজারকুল গ্রামে ঘোরাঘুরি করায় এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে, আবদুন্নবীকে আটক করে পুলিশের কাছে সৌপর্দ করে গ্রামবাসীরা। পুলিশের কাছে আবদুন্নবী স্বীকারোক্তি দিলে, বুধবার সকালে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে নিহত গোলাম কাদেরের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গত ১৯ নভেম্বর মাত্র তিন মাস পূর্বে নিহত গোলাম কাদের বিয়ে করেছে জানিয়ে ইউপি সদস্য জহির উদ্দিন বলেন, নিহত গোলাম কাদেরে আরেক ভাই মো. আবদুল্লাহ এ ঘটনায় জড়িত ছিলো না। সে মরদেহ দাফনের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করছে।
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আপন ভাইদের হাতে আরেক ভাই খুন হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রামবাসী হতভাগ হয়েছে বলে জানান নিহত গোলাম কাদেরের মামা কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য মো. হোসেন। তিনি জানান, তার ভাগীনা গোলাম কাদের ছোটকাল থেকেই নম্র-ভদ্র ছিলো। সে কৃষি কাজ করে দিন যাপন করতো। গ্রামবাসীরা গোলাম কাদের খুনের ঘটনায় সম্পৃক্ত আপন চার ভাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন।