খালেদ শহীদ, রামুঃ
তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেছেন, কক্সবাজারে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে রামু ও চকরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। করোনা মারাত্বক কোন রোগ নয়, সর্তকতার মাধ্যমে এটাকে প্রতিরোধ করা সম্ভব, আতংকিত হবেন না। কক্সবাজারবাসীর কাছে সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, সামাজিক সচেতনার মাধ্যমে মানুষবাহিত এই রোগ প্রতিরোধ করতে হলে, দয়া করে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করুন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের সাথে আছে। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) বিকাল ৪টায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নতুন ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নতুন হাসপাতাল ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ ছিলেন, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল শামশুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স, রামু প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি খালেদ শহীদ, রামু উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়া প্রমুখ।
কক্সবাজার-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ডাক্তার, নার্স সহ মেডিকেল টিমকে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে রামু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রস্তত রাখা হয়েছে। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট রামু হাসপাতালের যাত্রা শুরু হলো। দেশবাসীর কাছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন করোনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ যুদ্ধ করছে। সারাবিশ্ব যুদ্ধ করছে করোনার বিরুদ্ধে। আপনারা ঘরে বসেই সেই যুদ্ধে সামিল হবেন। কোলাহলপূর্ণ বাজার ও সামাজিক অনুষ্ঠানকে বয়কট করুন। সরকার নির্ধারিত সময় পর্যন্ত বাড়িতে অবস্থান করুন। সারা বিশ^ আজ কোয়ারিন্টেনে আছে, আপনারাও সেভাবে থাকুন। চিহ্নমূল-দরিদ্র অসহায় মানুষের পাশে আছেন প্রধানমন্ত্রী।
জানা যায়, ২০০৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করনের কাজ শুরু হরা হয়। নিয়ম অনুযায়ী ২০০৯ সালের আগষ্টে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ১৩ বছর পর শেষ হয় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নতুন ভবন নির্মাণ কাজ। ২০২০ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে রামুবাসীর কাংখিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন করেছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এইচইডি)।
প্রধান অতিথি সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এনজিও’র ঋণের কিস্তি আপাতত স্থগিত ঘোষণা করেছেন। কাউকে এখন এনজিও’র কিস্তি দিতে হবেনা। চিহ্নমূল-দরিদ্র অসহায় মানুষকে ভিজিডি, ভিজিএফ এবং দশটাকা’র চাল বিতরণ করা হবে। যারা আর্থিক ভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের পাশে সরকার আছে। আগামী জুন পর্যন্ত কাউকে ব্যাংকে ঋণ খেলাফী ঘোষনা করা হবে না। গার্মেন্টস শিল্পের কর্মচারীদের জন্যে ৫ হাজার কোটি টাকা প্রনোদনা বাজেট ঘোষনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আপনাদের সমস্ত সমস্যা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যান, মেম্বারদের জানান। তাদের সাথে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। আমরা আপনাদের সমস্যাগুলো সরকারকে জানাচ্ছি।
রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া বলেন, করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সনাক্ত করার পর রামু হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়ার জন্যে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। হাসপাতালে পর্যাপ্ত উপকরণ চলে এসেছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমন, নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে রামুতে ৫০ শয্যার আইসোলেশন ও কোয়েরেন্টাইন ইউনিট স্থাপনা করা হয়েছে। কক্সবাজারে বসবাসরত কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সনাক্ত হলেই, রামু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষ ব্যবস্থায় করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন উপজেলার ডাক্তার, নার্স নিয়ে গঠন করা হয়েছে মেডিকেল টিম। বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। আমাদের পর্যাপ্ত ডাক্তার ও নার্স রয়েছেন এই হাসপাতালে। করোনা ভাইরাস বিষয়ে আমাদের সকলকে সর্তক থাকবে হবে।