অনলাইন ডেস্কঃ
>> টাকা যাবে শ্রমিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে
>> ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ২ সুদে ঋণ নিতে পারবে
>> গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণ পরিশোধে মিলবে লম্বা সময়
করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত রফতানি খাতের জন্য প্রধানমন্ত্রী ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। সে তহবিলের প্রজ্ঞাপন জারি হচ্ছে সোমবার (৩০ মার্চ)। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে এ তহবিল পরিচালনা করবে দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক।
তবে এ তহবিল থেকে কোনো অর্থ মালিকরা পাবেন না। ব্যাংক থেকে এ তহবিলের অর্থ সরাসরি চলে যাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেতন হিসেবে। এ তহবিল থেকে মালিকরা অনুদান হিসেবে কোনো অর্থ পাবেন না, অর্থ ঋণ হিসেবে নিতে হবে। নির্ধারিত গ্রেস পিরিয়ডসহ লম্বা সময়ে ২ শতাংশ সুদে শিল্পমালিকরা ওই অর্থ পরিশোধ করবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের ঘোষণা দেন। তার ওই ঘোষণার পর সরকারি ছুটির মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তহবিল গঠনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছেন।
সোমববার ওই তহবিল গঠন করে অর্থ বিভাগের মনিটরিং সেল সার্কুলার জারি করবে বলে রোববার (২৯ মার্চ) জাগো নিউজকে জানিয়েছেন অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করা হবে।
তিনি বলেন, এ তহবিল পরিচালনা করবে সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো। ব্যাংক থেকে ২ শতাংশ সুদে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পমালিকরা তাদের শ্রমিকদের বেতন-ভাতার অর্থায়ন করতে পারবেন। তবে তহবিলের অর্থ মালিকদের হাতে বা অ্যাকাউন্টে যাবে না। ব্যাংক থেকে সরাসরি শ্রমিকদের স্যালারি অ্যাকাউন্ট বা বেতন হিসেবে চলে যাবে।
তিনি আরও বলেন, এ ঋণ পরিশোধে মালিকদের লম্বা সময় দেওয়া হবে। এর মধ্যে গ্রেস পিরিয়ডও থাকবে। তবে কতদিনের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হবে ও কতদিন গ্রেস পিরিয়ড থাকবে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি তিনি।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকগুলো এ তহবিল পরিচালনা করলেও তহবিলে ৫ হাজার কোটি টাকার জোগান দেবে সরকার। অর্থাৎ ব্যাংকগুলোকে সরকার ৫ হাজার কোটি টাকা দেবে। ব্যাংক এই ৫ হাজার কোটি টাকা শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাবদ ঋণ দেবে ২ শতাংশ সুদে। আর সরকার ব্যাংকগুলোকে যে ৫ হাজার কোটি টাকা দেবে, ব্যাংক শিল্পমালিকদের কাছ থেকে ঋণের অর্থ আদায় করে সরকারকে ওই ৫ হাজার কোটি টাকাই ফেরত দেবে।
যে ২ শতাংশ সুদ আরোপ করা হয়েছে, তা সরকার নেবে না। ব্যাংকগুলো এ তহবিল পরিচালন ব্যয় ও সার্ভিস চার্জ বাবদ ওই ২ শতাংশ অর্থ পাবে।
সোমবার অর্থ বিভাগের মনিটরিং সেল থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার এ তহবিল গঠনের সার্কুলার জারি হবে। এরপরে এ সার্কুলারের আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি গাইডলাইন তৈরি করে জারি করবে। ওই গাইডলাইন অনুযায়ী তফসিলি ব্যাংকগুলো এ তহবিল পরিচালনা করবে। এ তহবিল এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পরিচালিত হবে। অর্থাৎ চলতি মার্চ মাসের বেতন পরিশোধে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পমালিকরা চাইলে এ তহবিল ব্যবহার করে শ্রমিকদের বেতন দিতে পারবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ তহবিল গঠনের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেছেন, পোশাক খাতে এক মাসে বেতন দিতেই দরকার হয় ৪ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে পোশাক তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণের জোগানদাতা এক্সেসরিজ শিল্পমালিকরাও এ তহবিল থেকে সহায়তা চেয়েছেন।
সূত্রঃ জাগোনিউজ