মসউদুল হাসান মিনারঃ
করোনার লক্ষণ নিয়ে গত শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন কক্ষে চিকিৎসাধীন একজন বৃদ্ধা মারা গেছেন।এছাড়া ঢাকার বাইরেও করোনার উপসর্গ নিয়ে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষ মৃতদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এবং সেই সঙ্গে সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে।
এভাবে করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করায় সাধারণ জনগণের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে এর আগেও করোনার লক্ষণ নিয়ে আরও অনেকের মৃত্যু হয়েছে। তাদের অনেকের নমুনা সংগ্রহ বা পরীক্ষা করতে বিলম্ব হচ্ছে। তাই দেশে আদতে করোনা ভাইরাস কতটা ছড়িয়ে পড়েছে তা বলা মুশকিল।এ নিয়ে জনমনে ধোঁয়াশা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।এর মাঝে বিভিন্ন ধরনের গুজব সৃষ্টি হচ্ছে।
তাই জনমনে ও সচেতন মহলে যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হচ্ছে তা দ্রুত দূর করা জরুরি। অনেকসময় দেখা যাচ্ছে যে, কেউ মারা যাওয়ার দুই-তিন দিন পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মৃতব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। এর পর পরেই মৃতের এলাকা লকডাউন করে দেয়া হচ্ছে।প্রকৃতপক্ষে সঠিক তথ্যাদির অভাবে মানুষ করোনা ভাইরাস নিয়ে আতংকে আছে।এভাবে চলতে থাকলে মানুষের মাঝে আতংক অনেক বেড়ে যাবে।
ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ,আক্রান্তদের চিকিৎসা ও সন্দেহভাজনদের কোয়েরেন্টিনসহ সার্বিক কার্যক্রম জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন। করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি উচ্চপর্যায়ের টেকনিক্যাল কমিটি রয়েছে।স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় পর্যায়ে একটি কমিটিও রয়েছে;জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা কমিটি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন কমিটির মাধ্যমে করোনার এই মহামারী মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন ও পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জণগণকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা মানার তাগিদ দিয়েছেন। সরকার থেকে এত পদক্ষেপ নেয়ার পরেও জনসাধারণ করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা মানছেননা।অনেক জায়গায় সাধারণ জনগণ করোনার ভয়াবহতা অনুধাবন করতে পারছেনা। তারা করোনা প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে রীতিমতো পাত্তাই দিচ্ছেনা।
এরমধ্যেই অনেক জায়গায় করোনার উপসর্গ নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে।আমরা ইতোমধ্যে ইতালি, স্পেন, ব্রিটেন, জার্মানি,যুক্তরাষ্ট্রে করোনার ভয়াবহতা দেখেছি। ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়েছে। আর মৃত্যুবরণ করেছেন ৬১ হাজারের বেশি।তাই আমাদের দেশের জনসাধারণের মাঝে করোনাভাইরাস নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে গেলে এবং রীতিমতো করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা অমান্য করলে তার ফলাফল কতটা ভয়াবহ হবে তা উপলব্ধি করা যাচ্ছে।
তাই দেশের এই কঠিন পরিস্থিতিতে করোনা বিস্তার নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা দূর করা এবং সকলের করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আরও সচেতন হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।পাশাপাশি করোনার উপসর্গ দেখাদিলেই পরীক্ষা করা অতীব জরুরি।
কোনরকম অবহেলা করা উচিত হবেনা।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে সন্দেহভাজনদের করোনার পরীক্ষা করার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।
মসউদুল হাসান মিনার, শিক্ষার্থী,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।