খালেদ শহীদ, রামুঃ
রামুতে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানে প্রস্তুতকৃত আইসোলেশন ওয়ার্ডে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। এতে ব্যহত হতে পারে করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান। এ আশংকায় আইসোলেশন ওয়ার্ডের সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে, একটি জেনারেটর কিনতে নিজেদের উৎসবভাতার টাকা দিয়ে দিয়েছেন ইউএনও প্রণয় চাকমা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া। বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া’র হাতে চৈত্রসংক্রান্তি উৎসবভাতা ৩৫ হাজার টাকা তুলে দেন ইউএনও প্রণয় চাকমা। এ সময় চৈত্রসংক্রান্তি উৎসবভাতা নিজের ২০ হাজার টাকা দিয়ে এ মহৎ কাজে অংশীদার হন ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া.
জানা গেছে, রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা রোগীদের জন্য ৫০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশ্ব দূর্যোগ করোনা প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানের সময় বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটলে, তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি জেনারেটর প্রয়োজন। দ্রুত সময়ে জেনারেটর ক্রয়েও সমস্যা হতে পারে। তাই চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে প্রাপ্ত সরকারি উৎসবভাতার ৩৫ হাজার টাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমা ও ২০ হাজার টাকা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া আইসোলেশন ওয়ার্ডের জন্য জেনারেটর ক্রয়ের জন্য দিয়েছেন।
রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া জানান, হাসপাতালের করোনা রোগীদের সেবার জন্য প্রস্তুতকৃত আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগী এবং ডাক্তারদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা নিজের চৈত্র সংক্রান্তি বোনাসের একটি অংশের ৩৫ হাজার টাকা জেনারেটর ক্রয়ের জন্য দিয়েছেন। তিনি আরো জানান, ইউএনও মহোদয়ের এমন মহৎ উদ্যোগে সাড়া দিয়ে জেনারেটর ক্রয়ের জন্য তিনি নিজেও শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমার বোনাসের ২০ হাজার টাকা প্রদান করেছেন। ইউএনও’র ৩৫ হাজার এবং নিজের ২০ হাজার সহ মোট ৫৫ হাজার টাকায় ইতিমধ্যে একটি জেনারেটর ক্রয়ের প্রক্রিয়া চলছে।
সাংবাদিক আল মাহমুদ ভূট্টো জানান, সরকারি-বেসরকারি চাকুরীজীবিরা অনেকে ইতিমধ্যে মাসিক বেতনসহ উৎসবভাতা পেয়ে গেছেন। যারা দিনে আনে দিনে খায় তাদের তো আর এরকম সুযোগ নাই। করোনা পরিস্থিতিতে তাদের কাজ কর্ম বন্ধ। এ সময়ে প্রত্যেকের উচিৎ আত্মীয় স্বজন-পাড়া প্রতিবেশির খবর নেয়া, তাদের পাশে দাঁড়ানো। তিনি বলেন, এ দূর্যোগ সময়ে নিরাপদে থাকুন, মানবিকতার পরিচয় দিন। রোগীদের সেবা প্রদানে জেনারেটর ক্রয়ের জন্য নিজের উৎসবভাতা টাকা দিয়ে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থ’াপন করেছেন রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। সমাজের উচ্চবিত্ত মানুষদেরও তেমনি এ দূর্যোগ সময়ে কর্মহীন নিম্নআয়ের মানুষের পাশে দাঁড়ানো।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নোবেল কুমার বড়ুয়া বলেন, ইউএনও প্রণয় চাকমা চলমান করোনা পরিস্থিতিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি সার্বক্ষণিক হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সদের খবরাখবর নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা জানান, দেশ এখন চরম সংকটময় সময় পার করছে। করোনা পরিস্থিতিতে অনেক মানুষ অর্থ ও খাদ্য সংকটের দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি স্বচ্ছল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি, বেসরকারি ও সামাজিক সংগঠনকে দেশ ও জনকল্যাণে সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।