খালেদ শহীদ, রামুঃ
কখনও কর্মহীন হতদরিদ্রদের খাদ্য সামাগ্রী ও অর্থ প্রদানে সহায়তা করছেন, আবার কখনও হ্যান্ড মাইক হাতে নিয়ে ছুটছেন গ্রাম থেকে দূর্গম পল্লীতে, সড়ক থেকে অজপাড়া গ্রামের অলি-গলিতে। বিশ্ব দূর্যোগ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয় জনসাধারণকে সচেতন করার প্রয়াস চালাচ্ছেন ওরা, প্রশাসনের সাথে থেকে। বিগত ১৯ মার্চ থেকে মহা দূর্যোগে রামু উপজেলা প্রশাসনের সহযোগী হয়ে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব ও হোম কোয়ারেন্টাইন সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছেন। রামুতে স্বেচ্ছাসেবী হয়ে করোনায় কর্মহীন মানুষকে খাদ্য সামগ্রী ও অর্থ দিয়ে হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাংবাদিক সোয়েব সাঈদ, এনএসআই আবু হানিফ। সাংবাদিক সোয়েব সাঈদ রামু প্রেসক্লাবের সাবেক অর্থ সম্পাদক ও রামু রিপোর্টাস ইউনিটির সাবেক সভাপতি। আবু হানিফ রামুতে কর্মরত জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা’র (এনএসআই) প্রতিনিধি।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসের চলমান এই সংকটে নিঃস্বার্থভাবে মানুষের সেবায় নিবেদিতপ্রাণ সোয়েব সাঈদ ও আবু হানিফ। প্রতিদিন দুস্থ ও অসহায় মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছে খাবার। খবর পেলে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে হাজির হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের ঘরে ঘরে। সহযোগী হচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমার সাথে। মানবিকতার প্রাণশক্তি নিয়েই তারা করোনা ভাইরাসে ঘরবন্দী মানুষের কাছে উপজেলা প্রশাসনের খাবার নিয়ে হাজির হচ্ছেন। খাদ্য সামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি করোনা ভাইরাস রোধে সরকারের নির্দেশিত বিধিনিষেধ সবাই যাতে মেনে চলেন, সে জন্য মানুষকে সচেতন করতে প্রয়াস চালাচ্ছেন।
সাংবাদিক সোয়েব সাঈদ বলেন, বিগত ২৯ মার্চ থেকে আমরা উপজেলা প্রশাসনের সাথে থেকে রামু উপজেলার বিভিন্ন পথে-প্রান্তরে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছি। আমার করোনা ভাইরাস কীভাবে ছড়ায়, করোনা ভাইরাসের লক্ষণগুলো কী স্থানীয় বাসিন্দাদের জানাতে চেষ্টা করছি। প্রতিনিয়ত আমরা সাধারণ মানুষকে বুঝাতে চেষ্টা করছি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি আমরা কীভাবে এড়াতে পারি এবং সংক্রমণ এড়াতে সচেতনতা ও সতর্কতা প্রয়োজন। সামাজিক দূরত্ব ও হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলতে হবে। মানবতার কথা চিন্তা করেই করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহতা সর্ম্পকে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা।
রামু রিপোর্টাস ইউনিটির সাবেক সভাপতি সোয়েব সাঈদ আরো বলেন, রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা রাত-দিন করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব ও হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ইউএনও মহোদয়ের সাথে ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সচেতনতামূলক কর্মকান্ডে অংশ নিতে পারছি। প্রশাসনের সাথে থাকতে না পারলে, হয়ত মহা দূর্যোগের এই সময়ে মানবিকতা নিয়ে কাজ করতে পারতাম না। হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারতাম না। তিনি বলেন, নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই স্বেচ্ছাসেবী হয়ে প্রশাসনের সাথে থেকে ঘরবন্দী মানুষের জন্য কিছুটা করতে প্রয়াস চালাচ্ছি। মানবিক এ কাজ করতে গিয়ে নববর্ষের দিনেও পরিবারের সাথে সময় দিতে পারিনি। আমি ও আবু হানিফ দু’জনেই শিশু সন্তানের জন্মদিনে পরিবারের সাথে থাকতে পারিনি।
এনএসআই প্রতিনিধি আবু হানিফ বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের আরো বেশি সচেতন হওয়া জরুরী। এই কঠিন সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপদেশ এবং সরকারের নির্দেশনাগুলো মেনে চলা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমার, আপনার, সবার দায়িত্ব। তিনি আরো বলেন, বিশ্ব দূর্যোগ সময়ে মানুষের জন্য কিছুটা করার সুযোগ পেয়েছি। রামু’র ইউএনও আমাদের এমন একটি মহতীকাজে অংশ নিতে সুযোগ করে দিয়েছেন। ইউএনও প্রণয় চাকমা মানবিক গুণ সম্পন্ন একজন মানুষ। করোনার সচেতনায় যেমন কাজ করে যাচ্ছেন, তেমনি কর্মহীন হত দরিদ্র মানুষকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সামগ্রী ও অর্থ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন ইউএনও মহোদয়, আমরা তাঁর সহযাত্রী হচ্ছি।