অনলাইন ডেস্কঃ
লকডাউনে চলাচল ঠেকাতে কক্সবাজারে নিজের বাড়ির উঠান বন্ধের জেরে বিডিআর সৈয়দ (৬৫) নামে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করেছে ইয়াবা কারবারিরা। এ ঘটনায় নিহতের ভাই, ছেলে ও বোন আহত হয়েছেন।
কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাহাড়তলী ইসলামপুর ইসুলুরঘোনা এলাকায় শনিবার (১৮ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। আহতদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নিহত সৈয়দ আলম ওরফে বিডিআর সৈয়দ পাহাড়তলীর ইসুলুরঘোনার গোলাম কবিরের ছেলে। হামলায় গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি সৈয়দ আলমের ছেলে মো. জুয়েল (৩৪)। তাদেরকে উদ্ধার করতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের অস্ত্রের আঘাতে জখম হয়েছেন বিডিআর সৈয়দের ভাই খুরশেদ আলম ধলু (৪৫) ও বোন জুনু বেগম (৪০)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কক্সবাজার পৌরসভার দক্ষিণ রুমালিয়ারছরা চেয়ারম্যান ঘাটা থেকে ইসুলেরঘোনায় সহজ যাতায়তের পথ হিসেবে অনেকে বিডিআর সৈয়দের বাড়ির উঠানটি ব্যবহার করতেন। এ সুযোগে উঠান দিয়েই ইয়াবা নিয়ে পাহাড়ঘেরা ইসুলেরঘোনায় যাতায়াত করতেন স্থানীয় চেয়ারম্যান ঘাটার আটা কালুর পরিবারের ফরিদ আলমের ছেলে আলমগীর (২৫) ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।
এলাকার নিয়মিত পথ থাকার পরও বাড়ির উঠান দিয়ে ইয়াবা নেয়ায় আলমগীরের সাথে বিরোধ বাধে বিডিআর সৈয়দের ছেলে জুয়েলের। বাঁধা না মানায় একদিন উঠান দিয়ে যাওয়ার সময় ইয়াবা নিয়ে আলমগীরের সঙ্গে জুয়েলে গন্ডগোল হয়। এতে বিডিআর সৈয়দও যোগ দেন।
সূত্র আরও জানায়, ইয়াবার ঘটনার রেশ শেষ হওয়ার আগেই লকডাউনে অবাঞ্চিত চলাচল রোধ করতে বিডিআর সৈয়দ ঘেরা দিয়ে উঠানটি বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে দুদিন আগে আবারও বাকবিতণ্ডা হয় ইয়াবা কারবারি হিসেবে পরিচিত আলমগীরদের সাথে। এরই জেরে শনিবার সন্ধ্যার পর ফরিদের ছেলে আলমগীর, জাহাঙ্গীর, আতাউল্লাহর ছেলে আলমগীর, তার শ্যালক জলিল ও তাদের সহযোগী বোরহানসহ ৫-৬ জনের একটি চক্র বিডিআর সৈয়দকে ডেকে বাড়ি থেকে বের করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি পড়ে গেলে জবাই তাকে জবাই করে হত্যা করে।
এদিকে ঘটনা জানতে পেরে সৈয়দের ছেলে জুয়েল, ভাই খুরশেদ আলম ধলু ও বোন জুনু ঘটনাস্থলে এলে তাদেরকেও কোপায় দুর্বৃত্তরা। তাদের চিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়।
এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক বিডিআর সৈয়দকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যান্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জুয়েলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসক।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) মাসুম খান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ইয়াবা ও পথ বন্ধ করার ঘটনায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হামলায় বিডিআর সৈয়দ নিহত ও বাকিরা আহত হয়েছে বলে জেনেছি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। হামলাকারিদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।