অনলাইন ডেস্কঃ
প্রতিবেশীর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে অনেকেই চিন্তিত হয়ে পড়ছেন। মনে জাগছে নানা প্রশ্ন। এ ক্ষেত্রে প্রথম কথা হলো, অকারণে আতঙ্কগ্রস্ত হওয়া চলবে না। আরও কিছু বিষয়ে সচেতন থাকলে করোনার সংক্রমণ সহজেই এড়ানো যায়।
১. করোনা রোগী থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তাই পাড়ায়, গলিতে, ওপরতলা বা নিচতলায় কিংবা পাশের বাড়ি বা ফ্ল্যাটে করোনা রোগী থাকলে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ক্ষেত্রে আপনার দায়িত্ব হলো রোগী ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে মানবিক আচরণ করা, তাঁদের বিপদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এগিয়ে আসা। একই সঙ্গে পাড়ার বা অ্যাপার্টেমেন্টের অন্যরা যেন সুরক্ষিত থাকে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
২. টেলিফোনে বা ইন্টারকমে আক্রান্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। রোগীকে একটি নির্দিষ্ট ঘরে কীভাবে আইসোলেশনে থাকতে হবে, সে বিষয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে তাঁদের সহযোগিতা করুন।
৩. অনেকে করোনার সংক্রমণের বিষয়টি সামাজিক হয়রানির ভয়ে চেপে রাখার চেষ্টা করেন। এতে বিপদ আরও বাড়ে। রোগী ও তাঁর পরিবারকে আশ্বস্ত করুন যে এতে গোপন করার কিছু নেই।
৪. আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরাও আইসোলেশন মেনে চললে ভালো। এ ক্ষেত্রে প্রতিবেশী হিসেবে আপনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো, রোগীর পরিবারের প্রয়োজনীয় জিনিস বা বাজারের ব্যবস্থা করে দেওয়া। এতে রোগীর পরিবারের কাউকে আর বাইরে বের হতে হবে না। বাজারসদাই বা প্রয়োজনীয় জিনিস রোগীর বাড়ির দরজার সামনে রেখে আসুন।
৫. রোগী বা তাঁর পরিবারের কাউকে মসজিদ, দোকান, গলি, বাজারে ঘোরাঘুরি করতে দেখলে প্রথমে সতর্ক করুন, বুঝিয়ে বলুন। না শুনলে নিকটস্থ হাসপাতাল বা স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্য নিন। আক্রান্ত ব্যক্তি বা তাঁর পরিবারের লোক ইতিমধ্যে দালানের যেসব জায়গা ব্যবহার করেছেন, যেমন লিফট, করিডর, গ্যারেজ বা বাড়ির সামনের জায়গাটুকু জীবাণুমুক্ত করে নিন সবাই মিলে। যাঁরা ওই বাড়িতে যান, যেমন হকার, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ময়লা ফেলার লোক, তাঁদেরও সাবধান করুন, যেন তাঁরা দূরত্ব বজায় রাখেন। রোগীর বাড়ির ময়লা-আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলার ব্যবস্থা করতে পারলে ভালো হয়।
৬. আক্রান্ত ব্যক্তি ও পরিবারের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকার মানে এই নয় যে তাঁদের একঘরে করে ফেলবেন। নিয়মিত তাঁদের খোঁজখবর নিন। আশ্বাস দিন। রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন দেখা দিলে সাহায্য করুন।
৭. মৃত ব্যক্তি করোনা ছড়ায় না। কিন্তু সংক্রামক ব্যাধি আইন অনুসারে করোনা রোগীর মৃতদেহ বিশেষ নিয়মে সৎকার করতে হয়। যে কেউ দূরত্ব বজায় রেখে জানাজায় বা দাফনে অংশ নিতে পারবেন, কিন্তু দাফনের মূল কাজটুকু সুরক্ষা মেনে করতে হবে। যদি তা না-ও করেন, অন্তত মৃত ব্যক্তির পরিবারের পাশে দাঁড়ান।
সূত্রঃ প্রথম আলো