অনলাইন ডেস্কঃ
নিয়মিত দায়িত্বের পাশাপাশি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনগণের কোয়ারেন্টিন ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতে ভূমিকা রাখা পুলিশ বাহিনীর ৬৭৭ জন সদস্য প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
আক্রান্তদের বাইরে আরও ১ হাজার ২২৫ জন পুলিশ সদস্য কোয়ারেন্টিনে এবং ১৭৪ জন আইসোলেশনের আছেন।
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশের সদস্য রয়েছেন ৩২৮ জন।। গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের ৬৮ জন সদস্য নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে পুলিশ সদরদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষায় পুলিশ সদস্যদের আরও সাবধানে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।
“মুখে মাস্ক অবশ্যই রাখতে হবে। সামাজিদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। হাত কোনোভাবেই মুখে দেওয়া যাবে না,” সহকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন তিনি।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ২৩৮ জন। তাদের মধ্যে ৬৭৭ জন (৮ শতাংশের বেশি) পুলিশ হওয়ায় একক পেশাজীবী হিসেবে তারাই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন।
গেল সপ্তাহে পুলিশে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বেড়েছে। গত ২৩ এপ্রিল সারা দেশে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পুলিশ সদস্য ছিলেন ২১৮। তাদের মধ্যে ঢাকা মহানগরের ছিলেন ১১৭ জন।
সে সময় পুলিশ সদরদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, “পুলিশ সদস্যরা মানুষের সুরক্ষায় হাসিমুখে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন, হচ্ছেন আক্রান্ত ও স্থাপন করছেন অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
“বিশ্বজুড়েই করোনাভাইরাসের সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশও এই বাস্তবতা থেকে দূরে নয়। আমাদের দুই লক্ষাধিক সদস্যের একটি বড় অংশ সরাসরি মাঠে থেকে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে কাজ করছেন। সুরক্ষা সামগ্রী চাহিদা পূরণে কাজ করা হচ্ছে।”
পুলিশ সদস্যরা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় কাজের পাশাপাশি অপরাধ দমন ও আসামি গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানোর কাজও করছে।
এছাড়া আবশ্যিক খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য জরুরি সেবার সাথে যুক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে নিরাপত্তা দেওয়া, দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণ, মজুতদারি ও কালোবাজারি রোধ, সরকারি ত্রাণ ও টিসিবির পণ্য বিতরণে অনিয়মের ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেও পুলিশ ভূমিকা রাখছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসে রোগীর মৃত্যু হলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ও যথাযথ সন্মানের সাথে তার সৎকার করা হচ্ছে।
“ইতোমধ্যেই পুলিশের সদস্যরা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ মানুষের কাছে অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন।”
ঝুঁকিপূর্ণ এসব কাজ করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা আক্রান্ত হয়েছেন জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আক্রান্ত এই পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পর্যাপ্ত আয়োজন রাখা হয়েছে।
“তাদের সুস্থ করে তুলতে পুলিশের হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের আইজি বেনজীর আহমেদ ব্যক্তিগতভাবে খোঁজ খবর নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন।”
সূত্রঃ বিডিনিউজ