“আমার টি-টোয়েন্টির রেকর্ড নিয়ে আমি একটুও সন্তুষ্ট ছিলাম না। অনেকের সঙ্গেই কথা বলেছি এটা নিয়ে, অনেকভাবে চেষ্টা করেছি। কিছুই কাজে দিচ্ছিল না। আমাদের কোচ হাথুরুসিংহের সঙ্গেও অনেকবার কথা বলেছি এটা নিয়ে। বিপিএলের আগে উনি বলেছিলেন, ‘অনেক কিছুই তো চেষ্টা করলে টি-টোয়েন্টিতে। এবার একটু শান্ত থেকে ধীর-স্থির ব্যাটিং করে দেখতে পারো’। আমারও মনে ধরল কোচের পরামর্শ।”
“বিপিএলে সেভাবে খেলেই রান পেলাম। এখন তো পিএসএলেও একইভাবে খেলে সফল। বিপিএলের সময়ই মাশরাফি ভাই বলেছিল, ‘অবশেষে মনে হয় টি-টোয়েন্টিতে তোর খেলাটা খুঁজে পেয়েছিস।’ আমারও মনে হয়েছে, এভাবেই খেলা উচিত আমার।”
বিপিএল-পিএসএলের সাফল্যে বিশ্বাসটা মজবুত হয়েছে। বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও আপাতত এভাবেই ব্যাট করতে চান তামিম।
“আগে টি-টোয়েন্টিতে প্রত্যাশা মতো রান পাচ্ছিলাম না, তার চেয়ে হতাশার ছিল, নিজের ব্যাটিংটাই বুঝতে পারছিলাম না, কিভাবে খেলা উচিত। এখন আমি নিজের খেলাটা জানি। সাফল্য পাই বা না পাই, সেটি পরে। আপাতত এভাবেই ব্যাটিং করে যেতে চাই।”
পেশাওয়ার জালমিতে তামিমের কোচ ছিলেন জিম্বাবুয়ে গ্রেট, সাবেক ইংল্যান্ড কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। এক সময় র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ এই ব্যাটসম্যানের কাছ থেকেও অনেক কিছু শিখেছেন তামিম।
“যাওয়ার আগেই হাথুরুসিংহে আমাকে বলেছিল, অ্যান্ডির কাছ থেকে যতটা পারা যায় শিখতে। আমি গিয়ে অনেক কথা বলেছি। শিখেছিও বেশ কিছু দিক। সামনে সেসব কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।”
বৃহস্পতিবার দুবাই থেকে দেশে ফিরেছেন তামিম। একই সঙ্গে ফিরেছেন বাংলাদেশের আরও দুই পিএসএল অভিযাত্রী সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। শনিবার থেকে এশিয়া কাপের জন্য বাংলাদেশের অনুশীলন শুরু হলে যোগ দেবেন সাকিব-মুশফিক। তামিম উড়ে যাবেন থাইল্যান্ডে, যেখানে আগেই রেখে এসেছেন স্ত্রী ও মাকে। তামিম-আয়েশা দম্পতির প্রথম সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার কথা সেখানেই।
প্রথমবার বাবা হওয়া নিয়েও দারুণ রোমাঞ্চিত তামিম।
“ঠিক বলে বোঝাতে পারব না, কেমন লাগছে। সব কিছু ঠিকঠাক হলে, যখন বাবা হয়ে যাব, তখনও হয়ত বোঝাতে পারব না অনুভূতি!”
জীবনের দারুণ গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে স্ত্রীর পাশে থাকার জন্যই খেলতে পারছেন না আসছে এশিয়া কাপে। একদিকে বাবা হওয়ার রোমাঞ্চ, আরেকদিকে দেশের হয়ে খেলতে না পারার হাহাকার, এই দুই অনুভূতির লড়াইটা হয়েছে প্রবল।
“অনেকের কাছে হয়ত সিদ্ধান্তটি সহজ, প্রথমবার বাবা হওয়ার কাছে তুচ্ছ সবকিছুই। কিন্তু আমার জন্য এটি ছিল অনেক বড় সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশের হয়ে খেলা আমি মিস করতে চাইনি কোনোভাবেই। আমি খেলতে চাইলে স্ত্রীও রাজি হতো, আমি জানি। কিন্তু অনেক ভেবে দেখলাম, এই সময়টায় অন্তত ওর পাশে থাকা উচিত।”
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৫ বা ২৬ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীর আলোয় আসতে পারে খান পরিবারের নবতম সদস্য। তামিম ঠিক করে রেখেছেন, সবকিছু ভালোয় ভালোয় হলে, সন্তান জন্মের পর ২-৩ দিনের বেশি থাকবেন না। দেশে ফিরে শুরু করবেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি।
বিপিএল-পিএসএলে সফল হয়েছেন, তবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির সঙ্গে এখনও যে বোঝাপড়া কিছু বাকি আছে তামিমের!