নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
করোনা পরিস্থিতিতেও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ালো রামুর প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন ‘প্রজন্ম ৯৫’। তিন দফায় প্রায় তিনশো পরিবারকে খাদ্য সহায়তা, হ্যান্ড সেনিটাইজার বিতরণ ও করোনা সংকট মোকাবেলায় সংগঠনের ১০ সদস্যকে অর্থ সহায়তা দিয়েছে সংগঠনটি। প্রচার-প্রচারণা বিহীন অনেকটা নিরবেই চলছে মানবিক এ সংগঠনটির মানবিক তৎপরতা।
সর্বশেষ শনিবার (৯ মে) দুপুরে রামু চৌমুহনীর সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয়ে এলাকার অসহায় মানুষের জন্য খাদ্য সামগ্রী বিতরণের মধ্য দিয়ে মানবিক এ কর্মসুচি সম্পন্ন করা হয়। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সদস্য ও রামু উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন, প্রজন্ম ৯৫-এর সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আমিন মোরশেদ, প্রজন্ম ৯৫ বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক বস বজলুচ সাত্তার এবং অন্যান্যদের মধ্যে সুনীল বড়ুয়া,উদয়ন ধর, মো. মফিজ উল্লাহ,আমজাদ আলী খাঁন,ঝন্টু বড়ুয়া,আপন বড়ুযা, মো. হাসান, ডা. শফিকুল ইসলাম,মো.মীর কাশেম,মো. ছালামত উল্লাহ,মো. তাজ উদ্দিন বাহাদুর, জিয়াউর রহমান সেলিম,বিপুল বড়ুয়া আব্বু,নজিবুল আলম,তপন বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনের সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ড.বদিউল আলম পাভেল জানান,এই সংগঠনের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে বন্ধুত্বের বন্ধন সুদৃঢ় রাখা। তাই ১০৯৫ সাল থেকে ২৫ বছর পরে এসেও আমরা সেই বন্ধন অটুট রাখতে পেরেছি। এর পাশাপাশি শুরু থেকেই আমরা বন্ধুদের অর্থিক সহায়তায় নানা মানবিক ও শিক্ষা মূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করছি। অনেকটা প্রচার প্রচারণা বিহীন।
তিনি আরও বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া কিছু মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্ঠা করেছি। যদিও একটি উপজেলায় ২০০ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা তেমন বড় কিছু নয়,তবুও আমাদের সাধ্যমত আমরা দিয়েছি। দেশের এই ক্রান্তি লগ্নে কিছু মানুষও যদি আমাদের মাধ্যমে উপকৃত হয় এতেই আমাদের সার্থকতা।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আমিন মোরশেদ জানান, দেশ,জাতী ও এলাকার যেকোনো দুর্যোগে প্রজন্ম ৯৫,এর সদস্যরা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ সামাজিক অবস্থান থেকে এটাকে আমরা দায়িত্ব মনে করি। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই করোনা পরিস্থিতিতেও আমরা নিরবেই তিনশো পরিবারকে খাদ্য সহায়তা, ৫০ লিটার হ্যান্ড সেনিটাইজার বিতরণ ও করোনা সংকট মোকাবেলায় সংগঠনের ১০ সদস্যকে অর্থ সহায়তা দিয়েছি।
তিনি আরও জানান, দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে অনেকটা নিরবেই এই সংগঠন এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। প্রচার প্রচারণা তো নয়ই এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও দেওয়া হয়না।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রামু উপজেলার সাধারণ সম্পাদক রামু ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো.ইজত উল্লাহ জানান, প্রজন্ম ৯৫ এর প্রতিটি সদস্য স্ব স্ব অবস্থানে এখন আলোকিত মানুষ। তাই তাদের প্রতিটি কাজই সমাজের জন্য ইতিবাচক। যে কারণে বর্তমানে এ সংগঠনটির উপর মানুষ আস্থাশীল। তারা যা করছে সবই এখন এ সমাজের জন্য দৃষ্টান্ত। আমি সংগঠনটির আরও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের রামুর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ১৯৯৫ সালে এসএসসি পাশ করা বন্ধুদের সংগঠন ‘প্রজন্ম ৯৫’। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বন্ধুত্ব চর্চার পাশাপাশি নিজেদের পকেটের টাকায় সংগঠনের সদস্যরা বন্যা দুর্গত মানুষের জন্য সহায়তা,বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়,শীতার্থদের শীতবস্ত বিতরণ, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তা প্রদানসহ ধারাবাহিকভাবে নানা মানবিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। এছাড়াও রামুর শিক্ষার প্রসারে ২০১৪ সাল থেক সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষর্থীদের নিয়ে ‘প্রজন্ম ৯৫ বৃত্তি পরীক্ষা’ পরিচালনা করে আসছে।