কক্সবাজারের টেকনাফে গোপন বৈঠককালে ‘জঙ্গি’ সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন ‘আরএসও’র সাবেক কমান্ডার হাফেজ সালাউল ইসলাম ও সৌদি নাগরিকসহ ৪ জনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা। শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়।খবর বাংলাট্রিবিউনের।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ দাবি করেছেন, সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিসহ ওই জনপ্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বদি’র নেতৃত্বে বৈঠক চলাকালেই অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে আটক করে বিজিবি। এ সময় বদিসহ অন্য জনপ্রতিনিধিরা পালিয়ে যান।
তবে অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, বিজিবি’র অভিযানে ওই চার ব্যক্তিকে আটকের খবর পেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিসহ অারও তিন জন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সেখানে উপস্থিত হন এবং আটককৃতদের ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
আটক ব্যক্তিরা হলেন, কক্সবাজার জেলার দক্ষিণ মহুরি পাড়ার মৃত হাফেজ জিয়াউর হকের ছেলে ‘আরএসও’র সাবেক কমান্ডার হাফেজ সালাউল ইসলাম, বাড়ির মালিক শামলাপুরের মৃত মকবুল আলীর ছেলে মাওলানা সৈয়দ করিম, সৌদি নাগরিক আবু সালে আহমেদ আল গাম্বী, ঢাকার বাসিন্দা মৃত আবদুল হামিদের ছেলে মৌলভী মো. ইব্রাহীম।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ বলেন, শনিবার দুপুরে টেকনাফ উপজেলার শামলাপুরের মাওলানা সৈয়দ করিমের বাড়িতে ‘আরএসও’র সাবেক কমান্ডার হাফেজ সালাউল ইসলাম ও সৌদি নাগরিক আবু সালে আহমেদ আল গাম্বীর সঙ্গে গোপন বৈঠক চলছে এমন সংবাদ পেয়ে মেজর আবু রাসেল ছিদ্দিকীর নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে আটক করে।
তিনি আরও জানান, এ অভিযান চালানোর সময়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিসহ টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা রফিক উদ্দিন ও বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজ উদ্দিন ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। অভিযানকালে তারা পালিয়ে যান।
অভিযানে নেতৃত্বদানকারী টেকনাফ-২ বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর আবু রাসেল ছিদ্দিকী জানান, ‘আরএসও’ নেতাদের একটি গোপন বৈঠক হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে বিজিবি সেখানে অভিযান পরিচালনা করে রোঙ্গিহা জঙ্গি নেতাসহ চারজনকে আটক করা হয় এবং আরও তিনজন পালিয়ে যান।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মজিদ জানিয়েছেন, তাদের আটকের খবর পেয়েছি। তবে তাদের এখনও থানায় হস্তান্তর করা হয়নি।
এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির বক্তব্য জানতে চেয়ে মুঠোফোনে তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিার ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ রয়েছে, ‘জঙ্গি’ নেতা আরএসও’র সাবেক কমান্ডার হাফেজ সালাউল ইসলামের কক্সবাজার ও টেকনাফের সরকারি দলীয় সংসদ সদস্য এবং বিএনপি ও ইসলামী ঐক্যজোট নেতাদের সঙ্গে গোপন সম্পর্ক রয়েছে। গত ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর সালাউলের উত্থান শুরু হয়। কক্সবাজারের লিংক রোডে দক্ষিণ মুহুরীপাড়ায় সরকারি বন বিভাগের সাত একর ও স্থানীয় মানুষের তিন একরসহ ১০ একর জায়গা দখল করে সেখানে ইমাম মুসলিম (রহ.) ইসলামিক সেন্টার গড়ে তুলেছেন তিনি। কার্যত এখান থেকেই আরএসওর সব কার্যক্রম পরিচালিত হয়।