লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
আমাদের সবাইকে সেই ছোটবেলা থেকেই শেখানো হয়েছে যে দিনে দু’বার দাঁত ব্রাশ করা উচিত। দিনে দু’বার দাঁত ব্রাশ করলেই কেবল দাঁতের ক্ষয় এবং দুর্গন্ধ এড়ানো সম্ভব হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন অসুস্থতার ঝুঁকিও হ্রাস করে। দাঁত পরিষ্কারের নানা ভুল আপনার স্বাস্থ্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
জেনে অবাক হবেন যে প্রতিটি দাঁতের গোড়া আমাদের শরীরের নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কাজ করে। এটি জীবাণুদেরকে শরীরে প্রবেশে বাধা দেয় এবং স্বাস্থ্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা বজায় রাখে। মুখ গহ্বরের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিলে উন্নত হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। তাই আজই সঠিক উপায়ে দাঁতের যত্ন নেয়া শুরু করুন। অসুস্থতা এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী পরিস্থিতি এড়াতে আপনাকে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। যদি আপনার ডায়েটে পুষ্টিকর খাবার থাকে এবং চিনি কম থাকে তবে আপনার মুখ ক্ষয়জনিত প্লাক কম তৈরি করবে।
প্লাক কী?
প্লাক হলো আপনার মুখের ব্যাকটেরিয়া এবং খাবার ও পানীয়র মধ্যে থাকা চিনির একটি উপজাত। প্লাক দাঁতের ক্ষয় এবং মাড়ির রোগের কারণ হয়। যদি আপনি মাড়ির রোগে আক্রান্ত হন তবে আপনি দিনে দু’বার ব্রাশ ও ফ্লসিং করে ঝুঁকি কমাতে পারেন।
আমেরিকান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন অনুসারে প্রত্যেকের দু’বার দাঁত ব্রাশ করা উচিত এবং দিনে এক-দু’বার ফ্লস করা উচিত। আপনার যদি ডায়াবেটিস বা অটোইমিউন রোগ থাকে তবে আপনার অবশ্যই ব্রাশ এবং ফ্লস করতে হবে। এছাড়াও, অবশ্যই বছরে কমপক্ষে দু’বার তাদের ডেন্টিস্টের পরামর্শ হবে।
দাঁত ব্রাশ করার দুই মিনিট সময়ও কোনো কোনো শিশুর পক্ষে খুব দীর্ঘ মনে হতে পারে, তাই আপনি তাদের জন্য আনন্দিত করে তুলতে নাচতে বা তাদের প্রিয় গানটি গাইতে পারেন। এটি তাদের অনুপ্রাণিত করবে এবং দ্রুত সময় পার করতে সাাহয্য করবে।
নিয়মিত ব্রাশ না করলে কী হয়?
নিয়মিত ব্রাশ না করলে বা ডেন্টাল চেকআপ সময়মতো সম্পন্ন না করলে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমণের ভয় থাকে। আপনার মুখ থেকে এই ব্যাকটেরিয়াগুলো রোগাক্রান্ত মাড়ি বা ক্ষতিগ্রস্থ দাঁতের মাধ্যমে আপনার রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করতে পারে। এটি যখন ঘটে তখন আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং সি-প্রতিক্রিয়াশীল প্রোটিন বা সিআরপি লিভার থেকে মুক্তি পায়। সিআরপি এমন একটি পদার্থ যা শরীরে কোনো ধরণের প্রদাহ দেখা দিলে বের হয়। এই প্রক্রিয়াটি কোনো ক্ষতি করে না, তবে যদি ক্রমাগত বের হতে থাকে তবে শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্যের অন্যান্য দিক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
কে ঝুঁকিতে আছে?
দাঁত ক্ষয় হওয়ার ঝুঁকিতে কেবল প্রাপ্ত বয়স্কদেরাই নয়, কিন্ডারগার্টেন পৌঁছানোর মধ্যেই ৪০ শতাংশ শিশুদের দাঁত ক্ষয় হয়, যা পরবর্তী জীবনে স্বাস্থ্যের সমস্যার ঝুঁকিতে ফেলেছে।
আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখতে, দিনে দু’বার দাঁত ব্রাশ করা ভালো। এই অভ্যাসটি আপনাকে কেবল একটি ঝলমলে হাসিই দেবে না, পাশাপাশি মুখ থেকে জীবাণুও দূরে রাখবে।
দাঁত ব্রাশ করার জন্য পরিষ্কার পানি ব্যবহার করা নিশ্চিত করুন কারণ নোংরা পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করলে উপকারের বদলে অপকারই বয়ে আনে।
শিশুদের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস
শৈশবকালে ডেন্টাল হাইজিন বিকাশ করা ভালো। যারা নতুন মা-বাবা হয়েছেন তারা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া অপসারণের জন্য শিশুর মাড়ির উপরে একটি পরিষ্কার, পিচ্ছিল ওয়াশকোথ ব্যবহার করুন। এটি শিশুর দাঁত পরিষ্কার করার জন্য অভ্যস্ত হয়ে উঠবে, যা তাদের বয়সের সাথে সাথে দাঁতের যত্নের অভ্যাস আরও সহজ করে তুলবে।
শিশুরা বিভিন্ন বয়সে তাদের নিজের দাঁত ব্রাশ করতে প্রস্তুত। নিজের টুথব্রাশ বেছে নিতে দিয়ে আপনি তাদের দাঁত ব্রাশ করাটা মজাদার করতে পারেন। তাদের শিশু-বান্ধব টুথপেস্ট দিন।
সূত্রঃ জাগোনিউজ