লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
পোড়া স্থানের গুরুত্ব বুঝে সে অনুযায়ী চিকিৎসা করা উচিত।
গরম পানি কিংবা রান্না করতে গিয়ে আগুন, গরম তেল কিংবা পাত্রের ছেঁক খাওয়ার ঘটনা ঘটতেই পারে। এরকম পোড়ার কারণে দ্রুত চিকিৎসার জন্য রয়েছে কিছু ঘরোয়া টোটকা।
স্বাস্থ্য-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে সাধারণ পোড়ার ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানানো হল।
পোড়ার ধরন অনুসারে সাধারণ চারভাগে ভাগ করা হয়। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ মাত্রার পোড়া। অর্থাৎ ফার্স্ট, সেকেন্ড, থার্ড এবং ফোর্থ ডিগ্রি বার্ন।
নিচের পদ্ধতিগুলো ফার্স্ট ও সেকেন্ড ডিগ্রি বার্ন – এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এই ধরনের পোড়ার মধ্যে রয়েছে গরম পানীয়, চুলার আগুন অথবা গরম ওভেন এর ছেঁক খাওয়া। আবার এগুলোর কারণে অতিরিক্ত পুড়ে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
এছাড়াও বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে পোড়ার। যেমন-
বিকিরণের কারণে পোড়া:
গামা রশ্মির মতো উচ্চ শক্তির তেজষ্ক্রিয় রশ্মির কারণে হওয়া পোড়া। যা সাধারণত ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
রাসায়নিক পোড়া:
কড়া শক্তিশালি অ্যাসিড বা অ্যাল্কালাইন পণ্য যেমন- শৌচাগার পরিষ্কারক, গাড়ির ব্যাটারির তরল এবং ধাতু পরিশোধক ও খোদাই করতে ব্যবহৃত নাইট্রিক আসিড।
বৈদ্যুতিক পোড়া:
বিদ্যুতায়ীত হয়ে পোড়া যেমন- বিদ্যুতের সংস্পর্শে বা বজ্রপাতের কারণে পোড়া।
শীতল পানির ব্যবহার
কানাডা’র পিচ আর্চ হাসপাতালের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সেবক পল পদ্য, পোড়া স্থান গতিশীল শীতল পানিতে পাঁচ মিনিট ভিজিয়ে রাখার পরামর্শ দেন। এতে পোড়াস্থানের তাপ কমে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পেয়ে ক্ষতস্থান সুস্থ হয়ে ওঠে।
মনে রাখতে হবে শীতল মানে ঠাণ্ডায় জমে যাওয়ার মতো পানি নয়।
আক্রাণতস্থান পাঁচ মিনিটের বেশি সময় নিয়ে ঠাণ্ডা করা যাবে না। এছাড়াও সরাসরি বরফ, বরফ ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। এতে করে আক্রান্ত স্থানের কোষ পুনরায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে অথবা সেরে ওঠার গতি ধীর হতে পারে।
মনে রাখতে হবে, ক্ষত স্থানের ওপর সরাসরি পানি দেওয়া যাবে না। এতে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ হয়ে অবস্থা আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
অ্যালো ভেরা ব্যবহার
অ্যালো ভেরা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান সমৃদ্ধ যা আরোগ্যের প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে বলে জানান পদ্য।
অ্যাল্কোহল, সুগন্ধি বা রং মেশানো আছে এমন প্রসাধনী ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। তা না হলে সংক্রমণ বাড়তে পারে।
সংক্রমণ কমাতে মধু
অ্যালো ভেরার মতো মধুতেও রয়েছে ‘আন্টি-মাইক্রোবিয়াল’ উপাদান যা, সংক্রমণ কমায় এবং দ্রুত উপশম করে। উদাহরণ স্বরুপ- মধুতে আছে সুনির্দিষ্ট এনজাইম যা শর্করাকে ভাঙে এবং এটা জীবাণুনাশক হাইড্রোজেন পারক্সাইড সরবারহ করে।
ক্ষতের স্থান ভেদে সাধারণ পোড়াতে ১৫ থেকে ৩০ মি.লি. মধু সরাসরি ব্যবহার করা যেতে পারে অথবা গজ মধুতে ভিজিয়ে তা দিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
পোড়াস্থান পরিষ্কার করে ও পানি দিয়ে ঠাণ্ডা করার পরে এই ধাপ অনুসরণ করুন।
সূর্যরশ্মি এড়িয়ে চলুন
দাগ কমাতে পোড়া স্থানে যেন ক্ষতিকর সূর্যরশ্মি না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এর মানে হল-বাইরে যাওয়ার সময় যতটা সম্ভব ছায়ায় থাকা, সুরক্ষিত পোশাক পরা বা এসপিএফ ৩০ সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ব্যবহার করা, এতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে আসবে।
চিকিৎসকের সহায়তা
পোড়াভাব সাধারণত চার রকমের। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য ঘরোয়া চিকিৎসাই যথেষ্ট। তবে পোড়া যদি খুব বেশি গুরুতর হয় অর্থাৎ তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ের পোড়া ক্ষত হলে দ্রুতই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সূত্রঃ বিডিনিউজ