আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ভারত-চীন সীমান্তে ফের যে উত্তেজনা শুরু হয়েছে তা চলছেই। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের লাদাখ অঞ্চলে তিব্বত সংলগ্ন সীমান্তে টহলরত একদল ভারতীয় সেনা ও ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশের (আইটিবিপি) সদস্যকে ধস্তাধস্তির পর আটক করে চীনের সেনারা। তারপর কিছুক্ষণ আটকে রাখার পর তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি এই ঘটনা ঘটেছে লাদাখের পাংগং লেক এলাকার চীন-ভারত সীমান্তে। সূত্রের বরাতে এনডিটিভি এক অনলাইন প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়ে বলছে, ঘটনাটির বিস্তারিত বিবরণ নিয়ে তৈরি একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দফতরে দাখিল করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী।
ভারত-চীন সীমানা বিভক্তকারী রেখা লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে (এলএসি) এই ঘটনা ঘটে। দুই দেশের সেনা সদস্যদের মধ্যে ধস্তাধস্তির এই খবর জানা গেছে গত বুধবার। পরে অবশ্য দুই পক্ষের কমান্ডারদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সেই উত্তেজনার আপাত অবসান ঘটেছে। তবে এখন দুই পক্ষই সেনা টহল জোরদার করেছে সেখানে।
মোদি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের একজন আমলা এনডিটিভিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, `আমাদের কয়েকজন সামরিক সদস্যকে আটক করা নিয়ে ভারতীয় জওয়ান ও চীনা সেনাদের মধ্যে গত বুধবার ভয়াবহ এক পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল সেখানে। তবে পরে অবশ্য আটক জওয়ানদের ছেড়ে দেয় চীনা সেনারা।‘
শীর্ষ ওই আমলার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শুধু ধস্তাধস্তি নয় আইটিবিপি জওয়ানের অস্ত্রও কেড়ে নেয় চীনা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। তবে পরে সেসব অস্ত্র ফেরত দেওয়া ছাড়াও ভারতীয় সেনা জওয়ানদের মুক্তি দিলে তারা দেশে ফিরে আসে। অপর এক গণমাধ্যম জানিয়েছে, গত দুই সপ্তাহে ওই এলাকায় চীন অন্তত ১০০টি সেনা তাঁবু গেড়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো সামরিক বাহিনীর প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনা সেনারা ভারতীয় এলাকায় ঢুকে পড়ে ব্যাপক টহল চালায়। এছাড়া প্যাংগং লেকে মোটর বোট নিয়ে আক্রমণাত্মকভাবে তাদেরকে টহল দিতে দেখা গেছে বলেও জানিয়েছে তারা। বিগত কয়েকদিন ধরেই ভারত-চিন সীমান্তে এই উত্তেজনা চলছে।
ভারতের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, `বেশ বড় রকমের একটা বিষয় তৈরি হয়েছিল। এখন তা অনেকটা শান্ত হলেও একেবারে উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি।‘ তার কথা অনুযায়ী, দুই পক্ষের সমান সামরিক উপস্থিতি এখন সেখানে রয়েছে। গালওয়ান নদীর ধারে তিনটি পৃথক স্থানে চীনা সেনারা তাঁবু গেড়েছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
সূত্র এনডিটিভিকে জানিয়েছে, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে এ নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিং করছে সামরিক বাহিনী। প্রতিটি ব্রিফিং জানার পর তিনি সেখোনে নিরাপত্তা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এছাড়া গ্যালওয়ান অঞ্চলেও সেনা মোতায়েন জোরদার করা হয়েছে—১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধে যা ছিল ফ্ল্যাশপয়েন্ট।
সূত্রঃ জাগোনিউজ