অনলাইন ডেস্কঃ
দেশে করোনার বিস্তার ঠেকাতে সামনে থেকে দায়িত্ব পালন করছে বাংলাদেশ পুলিশ। ফলে খুব দ্রুতই পুলিশের মধ্যে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। তাই পুলিশ সদস্যের চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য সামগ্রীসহ অন্যান্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে চলতি অর্থবছরে অতিরিক্ত ২৩৯ কোট টাকা বরাদ্দ চেয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। তবে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় এ ক্ষেত্রে দুই খাতে মোট ৭৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ছাড় করেছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অর্থ বিভাগের বাজেট অনুবিভাগ-১ এর সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক বরাদ্দ পত্রে বলা হয়, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে অর্থ বিভাগের অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত হতে ৭২ কোটি টাকা বরাদ্দে সম্মতি প্রদান করা হলো।
এ অর্থ ব্যয় বিভাজনে বলা হয়েছে, চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জামদি সরবরাহ বরাদ্দ দেয়া হলো ২০ কোটি টাকা। পথ্য বাবদ বরাদ্দ এক কোটি ৫০ লাখ টাকা, ব্যবস্থাপনা ব্যয় বাবদ বরাদ্দ ১৫ কোটি টাকা, অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি ক্রয় বাবদ বরাদ্দ দুই কোটি ৮৫ লাখ টাকা, স্বাস্থ্যসমগ্রী বাবদ বরাদ্দ দুই কোটি ৬৫ লাখ টাকা, পরিবহন ব্যয় বাবদ বরাদ্দ পাঁচ কোটি এবং ভ্রমণ ব্যয় বাবদ ২৫ কোটি টাকা।
এসব অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে বলা হয়, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট ২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস ২০০৮ সহ যাবতীয় আর্থিক বিধি বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে।
বরাদ্দকৃত অর্থ চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতরের সংশ্লিষ্ট খাতে সমন্বয় করতে হবে। এছাড়া আগামী ৩০ জুনের পর যদি এ অর্থের কোনো অংশ অব্যয়িত থাকে তবে তা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।
মোহাম্মদ মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত অপর এক বরাদ্দ পত্রে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশ হাসপাতালসমূহে নিয়মিত নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত ডাক্তার, নার্স ও টেকনোলজিস্ট পদের সেবা আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় ক্রয়ের জন্য ৪র্থ কিস্তি চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন মাসের বেতন-ভাতা, ঈদুল ফিতর, বাংলা নববর্ষ ভাতার সর্বমোট তিন কোটি ৫৬ লাখ ৫১ হাজার ৭৮৪ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলো। এ টাকা চলতি অর্থবছরের বাজেটে জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবালয় অংশে সাধারণ থোক বরাদ্দ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ হতে পুলিশ হাসপাতালের আউটসোসিং খাতে বরাদ্দ দেয়া হলো।
এ অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রেও বলা হয়, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট ২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস ২০০৮ সহ যাবতীয় আর্থিক বিধি বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে।
আগামী ৩০ জুনের পর যদি এ অর্থের কোনো অংশ অব্যয়িত থাকে তবে তা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। এছাড়া এসব জনবলের নিয়োগ নিয়মিত করার অগ্রগতি পরবর্তী প্রস্তাবের সঙ্গে পাঠাতে হবে।
এদিকে শুরু থেকে দেশে করোনার বিস্তার ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে বাংলাদেশ পুলিশ। তাই খুব দ্রুতই পুলিশের মধ্যে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র থেকে জানা গেছে শনিবার (৩০ মে) পর্যন্ত পুলিশের চার হাজার ৭০৩ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৫ জন। একই সঙ্গে সুস্থ্য হয়েছেন ১৬০৬ জন।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, পুরো বিশ্ব আজ করোনা মহামরিতে আক্রান্ত। যেকোনো ক্রাইসিসে পুলিশ সব সময় সম্মুখ যোদ্ধা। এটা তারা প্রমাণ করেছে।
করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে গত মার্চ থেকে পুলিশের প্রায় দুই লাখ সদস্য কাজ করছে। আমদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। জনসংখ্যার তুলনায় আমাদের সম্পদও কম। তাই আমাদের কিছু সমস্যার সৃষ্টি হবে। এরপরও আমরা করোনা থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করছি এ সমস্যা দ্রুতই শেষ হবে। আমাদের সরকার সব আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের পাশে রয়েছে।
সূত্র: জাগোনিউজ