শারজিল শওকত:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার জাতীয় সংসদে কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও জনগণের জীবন-জীবিকা পুনরুদ্ধার করে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ এবং গণপরিষদ সদস্য কক্সবাজারের প্রয়াত নেতা এডভোকেট জহিরুল ইসলাম সহ জাতীয় সংসদ সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে স্মরণ করে শোকপ্রস্তাবের আলোচনায় বক্তব্য রাখেন।
শোকপ্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সদ্য প্রয়াত এডভোকেট জহিরুল ইসলামকে স্মরণ করে বলেন, কক্সবাজারের জহিরুল ইসলাম সাহেব তিনি আমাকে রাজনীতিতে উৎসাহ দিয়েছেন। ষাটের দশকে রাজনীতি একেবারে নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৫৮ সালে মার্শাল ল’য়ের সময় গ্রেফতার হন বঙ্গবন্ধু। ষাট সালের ডিসেম্বরে আমার বাবা বঙ্গবন্ধু মুক্তি পান কারাগার থেকে। রাজনীতি বন্ধ ছিল, তখন প্রতিবছরই কক্সবাজার যেতেন আমার বাবা। আমরাও যেতাম তার সাথে। তখন তিনি (জহিরুল ইসলাম) ছাত্র ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, পরবর্তীতে আমি যখন ৮১ সালে এবং তারও আগে আমার মনে হয়, ৬৮ সালে আমি কক্সবাজার গেলাম সেই সময়ও আমি রাজনীতির সাথে সক্রিয় ছিলাম। আমি বিয়ের পর ৬৮ সালের নভেম্বর মাসের কক্সবাজার গিয়েছিলাম। ১৭-১৮ নভেম্বর হবে, ওই সময় জহিরুল ইসলাম সাহেব আমাকে রাজনীতিতে উৎসাহ দিতেন।
এডভোকেট জহিরুল ইসলাম গণ ফোরামে যোগদান করার কথা উল্লেখ করে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, পরবর্তীতে তিনি একসময় কামাল হোসেন সাহেবের সাথে চলে যান। কিন্তু গেলেও আমার সাথে উনার যোগাযোগ ছিল। আমি উনাকে বলতাম আপনার জন্য আওয়ামী লীগের দরজা সবসময় খোলা।
এডভোকেট জহিরুল ইসলামকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঠিক মৃত্যুর কিছুদিন আগে খুব অসুস্থ অবস্থায় আমাকে জানান, নেত্রীকে একটু বলো আমি আওয়ামীলীগ হয়ে মরতে চাই। আমি যেন আওয়ামীলীগের হয়ে একটু জানাযা পাই।
শেখ হাসিনা বলেন, আমিতো উনাকে কখনো বের করে দিইনি। উনি নিজেই যান, নিজেই আসেন। উনি ছিলেন, উনি আছেন, উনি থাকবেন। এই যে তাদের যে একটা অবদান আমাদের সংগঠনের পেছনে আছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার জাতীয় সংসদে সাবেক গণপরিষদ সদস্য এডভোকেট জহিরুল ইসলাম, ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লা ও সাবেক সংসদ সদস্যসহ একাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তির মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নেন।
শোকপ্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী আরও স্মরণ করন, সাবেক সংসদ সদস্য হলেন, ওয়ালিউর রহমান রেজা (গাইবান্ধা-৫), খন্দকার আসাদুজ্জামান (টাঙ্গাইল-২), মমতাজ বেগম, আলহাজ্ব মকবুল হোসেন (ঢাকা-৯), কামরুন নাহার পুতুল (সংরক্ষিত আসন), সাবেক প্রতিমন্ত্রী আনোয়ারুল কবির তালুকদার (জামালপুর-৪), এম এ মতিন (চাঁদপুর-৫) এবং সৈয়দ রহমাতুর রব ইরতিজা আহসান (বরগুনা-২)।
সংসদে তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে এক মিনিটের নীরবতা পালন এবং মোনাজাত করা হয়। পরে সর্বসম্মতিক্রমে সংসদ সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মৃত্যুতে একটি শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।