লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
যেসব দেশে ইতিমধ্যেই লকডাউন উঠিয়ে নেয়া হয়েছে, সেসব দেশের মানুষেরা আবারও জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে বাইরে বের হতে শুরু করেছেন। তবে করোনাভাইরাস কিন্তু পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়নি, বরং তার সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই করোনা পূর্ব পৃথিবী আর করোনা পর্ববর্তী পৃথিবী কখনোই একইরকম হবে না। এমন অনেককিছুই করা যাবে না, যেগুলো আগে করা যেতো।
করোনাভাইরাসের সর্বনাশ রুখতে সামাজিক দূরত্বের বিকল্প নেই। এর পাশাপাশি বিভিন্ন জিনিস স্পর্শ করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। কারণ অনেকে স্পর্শ করে- এমন যেকোনো জিনিস থেকে আপনি সহজেই আক্রান্ত হতে পারেন। জেনে নিন, বাইরে বের হলেও যেসব জিনিস স্পর্শ করবেন না-
লিফটের বাটন
যদি আপনার বাড়ি বা কর্মক্ষেত্র কোনো উঁচু ভবনে হয় তবে আপনাকে প্রায়ই এই দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়তে হবে। যেহেতু খালি হাতে লিফটের বোতাম স্পর্শ করলে তা জীবাণু সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়ায় (প্রচুর মানুষ এটি ব্যবহার করে)। তাই একান্তই যদি লিফটে চড়তে হয় তবে বাটন প্রেস করার সময় হাতের আঙুলের বদলে কনুই ব্যবহার করুন বা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে গ্লাভস পরুন।
জিম সরঞ্জাম
জিমে গিয়ে ঘাম ঝরাচ্ছেন, এটি আপনার স্বাস্থ্য সচেতনতার লক্ষণ। কিন্তু সেই জিমে একই সরঞ্জাম কতজন ব্যবহার করছেন, তার খোঁজ রাখছেন কী! এগুলো ব্যাকটিরিয়া এবং ভাইরাসের আস্তানা বললেও ভুল হবে না। সুতরাং, আপনি যদি জিমে যেতে চান তবে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ওয়াইপ সঙ্গে রাখুন এবং ব্যবহারের আগে এগুলো পরিষ্কার করে নিন।
এসকেলেটরের হ্যান্ড্রেইল
হ্যান্ড্রেইলগুলো সবার ব্যবহারের জন্য বলেই এতে জীবাণু থাকা সবচেয়ে সহজ। যেহেতু বেশিরভাগ পাবলিক প্লেসে এসকেলেটার থাকে, তাই হ্যান্ড্রেইলগুলো অবশ্যই আপনার হাত রাখার জন্য সবচেয়ে অস্বাস্থ্যকর জায়গা। একটি গবেষণায় হ্যান্ড্রেইলে শ্লেষ্মা, মল, রক্ত এবং প্রস্রাবের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এই সময়ে হ্যান্ড্রেইলগুলো স্পর্শ করে বিপর্যয় ডেকে আনবেন না। যদি এসকেলটর ব্যবহার করতেই হয় তবে যেকোনোভাবে হ্যান্ডরেইল ধরা থেকে বিরত থাকুন। একান্তই যদি ধরে থাকেন তবে এরপর যত দ্রুত সম্ভব হাত ধুয়ে ফেলুন বা সঠিকভাবে স্যানিটাইজ করুন।
এটিএম কিপ্যাড
ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় টাকা তোলার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি এই এটিএম। কিন্তু এটি অনেকেই স্পর্শ করেন বলে জীবাণুর সংক্রমণ হওয়ার ভয়ও অনেক বেশি। এটিএম ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব নয়, তাই সংক্রমণ সংক্রমণ এড়াতে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে পারেন। কনুই ব্যবহার করে বাটনগুলি টিপতে বা হাতের গ্লাভস পরে এবং এটিএম প্যাড স্পর্শ করতে পারেন।
বাস/ট্রেনের হ্যান্ডেল বা খুঁটি
বাস, ট্রেন এবং জনসাধারণের যাতায়াতের অন্যান্য যানবহনগুলোতে কঠোর পরিচ্ছন্নতার পদ্ধতি থাকলেও আপনি কখনোই খুব বেশি নিশ্চিত হতে পারবেন না। গণপরিবহনে যাতায়াত করতে হলে ওভারহেড হ্যান্ডলগুলো স্পর্শ করবেন না বা খুঁটি ধরে দাঁড়াবেন না।এটি করা সহজ অভ্যাস নাও হতে পারে তবে এটি প্রয়োজনীয়। আপনি যদি ধাক্কা এবং ঝাঁকুনির সময়ে সতর্কতার জন্য খুঁটি বা হ্যান্ডল ধরেন তবে ডিসপোজেবল গ্লাভস পরে যানবহনে উঠুন এবং নামার পরে তা খুলে ফেলুন।
সহকর্মীর ল্যাপটপ/ডেস্কটপ
অফিসে কাজ করতে গেলেও আর আগের সহকর্মীদের সঙ্গে আড্ডা জমবে না। কারণ হলো সেই সামাজিক দূরত্ব। মজার কোনো ভিডিও সামনে এলো আর তা সহকর্মীকে দেখতে দিলেন- এভাবে সহজেই সে আপনার ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ স্পর্শ করতে পারবে। কিন্তু সহজ হিসাব হলো, অফিসে এমনকিছুই স্পর্শ করা যাবে না যা নিজস্ব নয়। সবাইকে এটি মেনে চলতে হবে। মাউস, কীবোর্ড এবং কীপ্যাড একাধিকজন স্পর্শ করলে সংক্রমণ আরও সহজ হয়ে যাবে।
মেকআপ টেস্টার
মেকআপ টেস্টার হলো ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের প্রজননক্ষেত্র। যেহেতু এগুলো বিভিন্নজন চোখ এবং ঠোঁটে ব্যবহার করে, তাই ভাইরাসের সংক্রমণও খুব সহজ। সুতরাং, পরেরবার মেকআপ সামগ্রী কেনার সময় ত্বকে বা ঠোঁটে টেস্টার ব্যবহার না করে বরং বিক্রয়কর্মীকে জিজ্ঞেস করে নিন।
সূত্রঃ জাগোনিউজ