অনলাইন ডেস্কঃ
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৯ জনের প্রাণ কেড়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট এক হাজার ৪৬৪ জনের মৃত্যু হলো। একই সময়ে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৫৩১ জনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল এক লাখ ১২ হাজার ৩০৬ জনে।
রোববার (২১ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
দেশজুড়ে ৬০টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে বুলেটিনে বলা হয়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ হাজার ৭১০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৫ হাজার ৫৮৫টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ছয় লাখ ১২ হাজার ১৬৪টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৫৩১ জনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ১২ হাজার ৩০৬ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৯ জন। এ নিয়ে মোট মারা গেলেন এক হাজার ৪৬৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও এক হাজার ৮৪ জন। সব মিলিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা এখন ৪৫ হাজার ৭৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের পুরুষ ৩৫ জন এবং নারী চারজন। এদের মধ্যে ০ থেকে ১০ বছরের একজন, ২১ থেকে ৩০ বছরের একজন, ত্রিশোর্ধ্ব ছয়জন, চল্লিশোর্ধ্ব ১২ জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১২ জন, ষাটোর্ধ্ব চারজন, সত্তরোর্ধ্ব দুজন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী একজন রয়েছেন। ৩৩ জন মারা গেছেন হাসপাতালে এবং ছয়জন বাসায়। এদের ১৬ জন ঢাকা বিভাগে, ১১ জন চট্টগ্রাম বিভাগে, চারজন খুলনা বিভাগে, দুজন রাজশাহী বিভাগে, চারজন বরিশাল বিভাগে এবং একজন করে রংপুর ও সিলেট বিভাগে মারা গেছেন।
গত শনিবারের (২০ জুন) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৪ হাজার ৩২টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ২৪০ জনের মধ্যে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু এবং রোগী শনাক্ত- উভয় সংখ্যাই বেড়েছে। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৫৩ জনের। সে তথ্য জানানো হয় ১৬ জুনের বুলেটিনে। আর সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড আছে চার হাজার আট জনের। এ তথ্য জানানো হয় ১৭ জুনের বুলেটিনে।
রোববারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত রোগী শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩০ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৬৩১ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ১৯ হাজার ৮১৪ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩৫৬ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন সাত হাজার ৬২৪ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১২ হাজার ১৯০ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৮১৯ জনকে এবং এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ ৩৯ হাজার ৫৮৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ১৩২ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৭৬ হাজার ৩৭১ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬৩ হাজার ২০৫ জন।
বুলেটিনে ডা. নাসিমা সুলতানা বরাবরের মতো করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।
গোটা বিশ্ব এখন করোনাভাইরাসের ছোবলে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়ানোর পর এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৮৯ লাখ ৩১ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা চার লাখ ৬৭ হাজার। তবে সাড়ে ৪৭ লাখের মতো রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় করোনাভাইরাস।
সূত্রঃ জাগোনিউজ