লাইফস্টাইল ডেস্কঃ
কমোডের ঢাকনা খোলা অবস্থায় ‘ফ্লাশ’ করার কারণে সেখান থেকে রোগজীবাণু ছিটে বাতাসে তিন ফিট উচ্চতা পর্যন্ত ছড়াতে পারে।
চীনের গবেষকদের করা গবেষণায় দেখা যায়, ‘ফ্লাশ’ করার পর কমোড থেকে ছিটে আসার তরলকণার সঙ্গে মিশে থাকে এই রোগজীবাণু। ছড়াতে পারে তিন ফিট বা ৯১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত।
চীনের ইয়াংঝোউ ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটারের সাহায্যে সৃষ্ট নমুনা পরিস্থিতিতে এই গবেষণা করা হয়। তাই এই রোগজীবাণু সংক্রমণ রুখতে সবসময় ‘ফ্লাশ’ করার আগে কমোডের ঢাকনা নামিয়ে নিতে হবে।
‘ফিজিকস অফ ফ্লুইডস’ শীর্ষক সাময়িকীতে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।
বর্তমান সময়ের সবচাইতে মারাত্বক আতঙ্ক করোনাভাইরাসও এই বায়ুবাহী তরলকণার সাহায্যে সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জৈবিক বর্জ্যে সেই ভাইরাসের অস্তিত্ব পেয়েছেন গবেষকরা আগেই। তবে তা সুস্থ ব্যক্তিকে সংক্রমিত করতে কতটুকু কার্যকর সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
একারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষকরা পয়নিষ্কাশন প্রণালীর নমুনা পরীক্ষা করছেন, যাতে এগুলোর মাধ্যমেও রোগ ছড়ায় কি-না তা নিশ্চিত হওয়া যায়।
করোনাভাইরাসের ব্যাপারে জানা না থাকলেও অন্য অসংখ্য রোগজীবাণু এই পদ্ধতিতে ছড়ানো সম্ভব, যাকে বলা হয় ‘ফিকাল-ওরাল ট্রান্সমিশন’।
কীভাবে রোগজীবাণু ছড়ায় তার বর্ণনা তুলে ধরেছেন গবেষণার গবেষক, ইয়াংঝোউ ইউনিভার্সিটির জি জিয়াং ওয়াং ও তার সহকর্মীরা।
তারা বলেন, “‘ফ্লাশ’ করার পর কমোডের প্রচুর পানি প্রবাহিত হয় এবং তা কমোডের কিনারায় বাধা পেয়ে ঘুর্ণীর সৃষ্টি করে। এখান থেকেই বাতাসে তরলকণা ছিটকে যায়, সঙ্গে থাকে বিভিন্ন রোগজীবাণু। এই তরলকণা এতই ক্ষুদ্র যে তা এক মিনিটেরও বেশি সময় ভাসতে পারে।
ইউনিভার্সিটি অফ ব্রিস্টল’য়ের ‘ব্রিস্টল অ্যারোসল রিসার্চ সেন্টারের ডা. ব্রায়ান বিজডেক বলেন, “যদিও এভাবে যে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি, তবে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজনীয়তা আমরা দেখেছি। আর তাই গবেষকদের পরামর্শ হল, ‘ফ্লাশ’ করার সময় ঢাকনা নামিয়ে রাখা, শৌচাগার পরিষ্কার রাখা, শৌচকাজ শেষে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করা। করোনাভাইরাস ছাড়াও আরও অনেক রোগজীবাণু এভাবে ছড়াতে পারে, ডেকে আনতে পারে ছোট-বড় বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা। তাই সর্বোচ্চ পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে সবসময় তৎপর থাকতে হবে।”
সূত্রঃ বিডিনিউজ