সুনীল বড়ুয়া:
পুরনো প্রেমিকার সাথে প্রতারণা করে অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে নিয়ে বিয়ের পিড়িতে বসেছিল আবুল কালাম (২৬) নামের এক যুবক। বর-কনে উভয় পক্ষের লোকজনের খাওয়া-দাওয়ার পর্বও প্রায় শেষ। এমনই সময়ে পুলিশ ফোর্সসহ কমিউনিটি সেন্টারে হাজির হয়ে এ বাল্যবিয়ে ভেঙ্গে দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত। আর বাল্য বিয়ের অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগটি করেন সেই পুরনো প্রেমিকা।
তবে অনাকাংখিত এ ঘটনার চাপ সইতে না পেরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন কনের দুই ভাই। শুক্রবার (৫ আগষ্ট) বিকালে ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের রামু উপজেলার জোয়ারিয়া নালা ইউনিয়নের ম্যারেজ পার্ক কমিউনিটি সেন্টারে।
এ সময় বর ও কনে পক্ষের লোকজনের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে।
জানা গেছে, কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ টেকপাড়া এলাকার আব্দুল মোতালেবের ছেলে আবুল কালাম আজাদ পুরনো প্রেমিকার সাথে প্রতারণা করে এক অপ্রাপ্ত বয়সী মেয়েকে বিয়ে করতে যাচ্ছিল। মাত্র দুই বছর আগে ওই মেয়েটি অষ্টম শ্রেণী থেকে পড়ালেখা ছেড়েছে। কিন্তু এ বিয়েতে বাঁধ সাজেন রামু উপজেলার রশিদ নগর ইউনিয়নের পানিরছড়া হরিতলা এলাকার মোস্তাক আহাম্মদের মেয়ে কুলসুমা আকতার। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে এ বিয়ে ভেঙ্গে দেন রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও ) সেলিনা কাজী। এ সময় উভয় পক্ষকে দুই হাজার টাকা অর্থদন্ডও করা হয়।
এ সময় প্রেমিকা কুলসুমা আকতার অভিযোগ করেন, বর আবুল কালামের সাথে তার দীর্ঘ তিন বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। কিন্তু এক মাস আগে থেকে হঠাৎ যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় কালাম। পরে তার সাথে প্রতারণা করে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোরীকে বিয়ে করার খবর পেয়ে তিনি থানায় অভিযোগ করেন ।
ইউএনও সেলিনা কাজী আমাদের রামু ডটকমকে বলেন, মেয়েটি মাত্র দু’বছর আগে অষ্টম শ্রেণী থেকে পড়ালেখা ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু কনে পক্ষ ভুয়া জন্ম সনদ দেখিয়ে এ বিয়ে সম্পাদন করছিল। যে কারণে বিয়েটি ভেঙ্গে দেওয়া হয় এবং কনের মা-বাবার শারীরিক অসুস্থতার কারণে মানবিক দিক বিবেচনা করে শুধুমাত্র দুই হাজার টাকা অর্থদন্ড দিয়ে রেহাই দেওয়া হয়।
রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর আমাদের রামু ডটকমকে জানান,পুরোনো প্রেমিকার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে বর পক্ষের লোকজন পুলিশকে ইট পাটকেল ছোঁড়ে । এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স নিয়ে তিনি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে অতিরিক্ত ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছার সাথে সাথে বর,বরযাত্রী এবং বরের মা-বাবা পালিয়ে যায়।
ওসি আরো জানান,ঘটনাস্থলেই পুরনো প্রেমিকা কনের মা-বাবা এবং ভাই সরাসরি অভিযোগ করেন। এক পর্যায়ে তিনি (প্রেমিকা) তার গর্ভে কালামের সন্তান আছে বলেও জানান। অনাকাংখিত এ ঘটনার আকষ্মিকতা সহ্য করতে না পেরে কনের দুই ভাই আকষ্মিকভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে। তবে তাদের নাম জানাতে পারেননি তিনি।