অনলাইন ডেস্কঃ
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের উপর হামলার করার মতো ধৃষ্টতা যারা দেখাবে, তাদেরকে চরম মূল্য দিতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সোমবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে মন্ত্রী একথা বলেন।
মুজিববর্ষে ঢাকার ধোলাইড়পাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলে তার বিরোধিতা শুরু করেন কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক ধর্মীয় বিভিন্ন সংগঠনের জোট হেফাজতে ইসলামের নেতারা।
এর প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন, লেখক-অধ্যাপক, শিল্পী-সাহিত্যিকরা। ভাস্কর্যবিরোধীদের শাস্তি দাবিতে প্রতিদিন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
ভাস্কর্যের বিকল্প হিসেবে ‘মুজিব মিনার’ নির্মাণের যে প্রস্তাব হেফাজতে ইসলামসহ বিরোধীরা দিয়েছেন, তা নাকচ করে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “ভাস্কর্য নির্মাণকাজ, যেটা নির্মাণাধীন, নির্মাণকাজ চলবে। আমরা ভাস্কর্য নির্মাণ করব। তারা যে প্রস্তাব দিয়েছে, এটি তারা দেখুক এটি তাদের বিষয়।”
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “এ ধরণের ঘটনা, যারা ঘটাবে সেটিতো অবশ্যই সংবিধান ও রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল কারণ বঙ্গবন্ধু তো আমাদের জাতির পিতা সাংবিধানিকভাবে।
“আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের উপর হামলা যারাই করবে, এ ধৃষ্টতা যারাই দেখাবে, তাদের চরম মূল্য দিতে হবে। কোন অবস্থাতেই এ প্রশ্নে আপস করা যায় না। এটা অযৌক্তিক, অগ্রণযোগ্য।”
জাতির জনকের ভাস্কর্যের বিরোধিতায় বক্তব্য দেওয়ায় ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ অভিযোগে সোমবার দুটি মামলার আবেদন জমা পড়েছে ঢাকার আদালতে। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল এ আবেদন করেন।
আওয়ামী লীগ বা যুবলীগ মামলা করল না কেন জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বঙ্গবন্ধু কি কোনো দলের, নন পলিটিক্যাল মঞ্চ থেকে করা ভাল বলে আমি মনে করি।”
ভাস্কর্য ভাঙচুরে কাউকে হুকুমের আসামি করা হবে কিনা জানতে চাইলে কাদের বলেন, “আমরা যদি সেরকম প্রমাণ পাই কারো বিরুদ্ধে হুকুম দিয়েছে সাক্ষ্য প্রমাণ থাকে তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।”
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা এবং হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক রাজধানীর ধোলাইরপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে আপত্তি জানিয়েছেন। ভাস্কর্য নির্মাণ করা হলে তা বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সরকার কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা জানতে চাইলে সড়কমন্ত্রী বলেন, “আমরা সরকারে আছি ক্ষমতায় আছি আমাদেরকে ঠাণ্ডা মাথায় থাকতে হবে। কথায় কথায় মাথা গরম করলে চলবে না, বুঝে শুনে পরিস্থিতি ট্যাকল করতে হবে।
“কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে এখানে আবার আমাদের দেশে ধর্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সেনসিটিভ ইস্যু। কাজেই এখানে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বিষয়গুলো দেখছেন এবং এটা ট্যাকল করছেন সেভাবে, আমরা অহেতুক দেশে একটা অশান্তি-বিশৃঙ্খল পরিবেশের উসকানি দিতে চাই না। আমরা যুক্তি দিয়ে বলতে চাই, তারা যে বলছে তা সঠিক না।”
পরিস্থিতি যে পর্যায়ে রয়েছে তাতে যুক্তি দিয়ে সমাধান সম্ভব কিনা জানতে চাইলে কাদের বলেন, “সরকারপ্রধান মনে করেন, তাহলে হতে পারে তার সিদ্ধান্তের ব্যাপার।”
সূত্রঃ বিডিনিউজ