অনলাইন ডেস্কঃ
দলের পারফরম্যান্সের ওঠানামার মাঝে নিজেও ভুগছিলেন কিছুটা। কয়েকটি ম্যাচে ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। সেই আড়াল থেকে যেন বেরিয়ে এলেন লিওনেল মেসি। অধিনায়কের পাশে আলো ছড়ালেন প্রতিভাবান পেদ্রি। ৩ বছর পর আথলেতিক বিলবাওয়ের মাঠে জিতল বার্সেলোনা।
সান মামেসে বুধবার রাতে লা লিগার ম্যাচটি ৩-২ গোলে জিতেছে রোনাল্ড কুমানের দল। দারুণ এই জয়ে লিগ টেবিলের তিন নম্বরে উঠেছে বার্সেলোনা। মৌসুমে এই প্রথম শীর্ষ চারে উঠল দলটি।
ইনাকি উইলিয়ামসের গোলে বার্সেলোনা পিছিয়ে পড়ার পর সমতা টানেন পেদ্রি। পরে জোড়া গোল করেন মেসি। শেষ দিকে ব্যবধান কমান মুনিয়াইন।
গত মৌসুমে এখানে ১-০ গোলে হেরে শিরোপা ধরে রাখার অভিযান শুরু করেছিল বার্সেলোনা। এর আগের মৌসুমে দুই লেগেই দলটির বিপক্ষে পয়েন্ট হারিয়েছিল তারা।
‘মামেস ভীতি’ শুরুতেই পেয়ে বসে বার্সেলোনাকে। দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে তৃতীয় মিনিটে এগিয়ে যায় বিলবাও। মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের থ্রু পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে অনায়াসে ডিফেন্ডার ক্লেমোঁ লংলেকে ফাঁকি দিয়ে নিচু শটে ঠিকানা খুঁজে নেন উইলিয়ামস।
তিন মিনিট পর স্বাগতিকদের আরেকটি প্রতি-আক্রমণে ফের উন্মুক্ত হয়ে যায় বার্সেলোনার রক্ষণ। তবে পাশের জালে মারেন ইউরি বের্চিচে। দুই মিনিট পর পাল্টা আক্রমণে সমতা টানার সুযোগ পায় বার্সেলোনা; তবে সের্জিনো দেস্তের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক। ত্রয়োদশ মিনিটে উসমান দেম্বেলের ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া জোরালো শটও দারুণ নৈপুণ্যে ফেরান গোলরক্ষক উনাই সিমোন।
পরের মিনিটে গোলের দেখা পায় বার্সেলোনা। বাঁ দিক থেকে মেসির দূরের পোস্টে নেওয়া ক্রস বেরিয়েই যাচ্ছিল, শেষ মুহূর্তে বাইলাইন থেকে লাফিয়ে নেওয়া ভলিতে ছয় গজ বক্সের মুখে বাড়ান ফ্রেংকি ডি ইয়ং। আর অরক্ষিত পেদ্রি অনায়াসে হেডে বল জালে পাঠান।
৩৮তম মিনিটে পেদ্রি-মেসির দারুণ বোঝাপড়ায় এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ডি-বক্সের মুখে তরুণ সতীর্থকে বল বাড়িয়ে এগিয়ে যান অধিনায়ক। ডিফেন্ডারদের মধ্যে ঘিরে থাকা অবস্থায় পেদ্রিও সময় নষ্ট না করে ব্যাক-হিলে ফিরতি পাস দেন মেসিকে। ডি-বক্সে প্রথম ছোঁয়ায় নিচু শটে গোলটি করেন তিনি।
প্রথম গোলের মতো এখানেও সিমোনের কিছুটা দায় ছিল; নিজের লাইনে থাকলে যথেষ্ট সময় পেতেন, কিন্তু মেসির দিকে এগিয়ে গিয়ে মাঝপথে থেমে যান তিনি।
দুই মিনিটের ব্যবধানে আরও দুটি দারুণ সুযোগ পায় সফরকারীরা। গ্রিজমানের জোরালো শট সিমোন রুখে দেওয়ার পর ডি-বক্সের মুখ থেকে ঠিকমতো শট নিতে পারেননি মেসি।
দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে আত্মঘাতী গোল খেতে বসেছিল বার্সেলোনা। বাঁ দিক থেকে আসা ক্রস ঠেকাতে গিয়ে রোনালদ আরাহোর পায়ে লেগে বল পোস্টের একটু বাইরে দিয়ে গেলে বেঁচে যায় তারা।
দুই মিনিট পর মেসি জালে বল পাঠালেও গোল মেলেনি। খুব সামান্য ব্যবধানে অফসাইডে ছিলেন তিনি। ৫৯তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে তার ট্রেডমার্ক শট পোস্টের ওপরের অংশে লাগে।
চাপ ধরে রেখে ৬২তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় বার্সেলোনা। জর্দি আলবার বাড়ানো বল ধরে অঁতোয়ান গ্রিজমান ছোট পাস দেন মেসিকে। প্রথম ছোঁয়ায় উঁচু শটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন তিনি। রেকর্ড ছয়বার বর্ষসেরা ফুটবলারের আসরে গোল হলো ৯টি, সমান গোল নিয়ে আগে থেকে শীর্ষে আছেন সেল্তা ভিগোর ইয়াগো আসপাস।
১০ মিনিট পর হ্যাটট্রিক হয়ে যেতে পারত মেসির; কিন্তু আরও একবার দুর্ভাগ্য বাধ সাধে। তার বাঁ পায়ের জোরালো শট পোস্টে লেগে ফেরে।
শেষ দিকে নেতার ভুলেই পয়েন্ট হারাতে বসেছিল বার্সেলোনা। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে নিজেদের সীমানায় মেসির বিরল ভুল পাসে সতীর্থের পা ঘুরে ডি-বক্সের মুখ থেকে ব্যবধান কমিয়ে নাটকীয়তার আভাস দেন মুনিয়াইন। তবে, বাকি সময়টা নিরাপদেই কাটিয়ে দেয় সফরকারীরা।
১৭ ম্যাচে ৯ জয় ও ৩ ড্রয়ে তিন নম্বরে উঠে আসা বার্সেলোনার পয়েন্ট ৩১।
১৫ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে আতলেতিকো মাদ্রিদ। দুই ম্যাচ বেশি খেলে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে রিয়াল মাদ্রিদ।
১৮ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে রিয়াল সোসিয়েদাদ।
১৮ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে বিলবাও।
সূত্রঃ বিডিনিউজ