খালেদ শহীদ, রামুঃ
বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছে বলেই আমরা পেয়েছি বাংলাদেশ। বিশে^র বুকে বাংলাদেশের মানচিত্র অংকিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তিনি আমাদের জাতির পিতা। আজকের প্রজন্মকে জানাতে হবে স্বাধীনতার ইতিহাস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের কথা। আজকের প্রজন্মরাই আগামীতে এদেশের নেতৃত্ব দিবেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আজকের প্রজন্মকে জাগাতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে। সোমবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রামু স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু উৎসবের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী একথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন পরিষদ, রামুর আয়োজনে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু উৎসবের আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন, কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি জাফর আলম চৌধুরী। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন, ‘বঙ্গবন্ধু জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন পরিষদ, রামুর চেয়ারম্যান কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল। স্বাগত বক্তৃতা করেন, বঙ্গবন্ধু জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন পরিষদ, রামুর সদস্য সচিব, রামু উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সোমবার থেকে সাত দিনব্যাপী ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’ শুরু হয়েছে। ‘তোমার জন্ম হয়েছে বলেই আমরা পেয়েছি বাংলাদেশ’ এ শ্লোগানে প্রধান অতিথি কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও ‘বঙ্গবন্ধু জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন পরিষদ, রামুর চেয়ারম্যান কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল রামুতে সাত দিনব্যাপী ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’ উদ্বোধন করেন। বিকাল ৫টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়ানোর মধ্যদিয়ে রামুতে ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’ এর আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা হয়। এ সময় ‘বঙ্গবন্ধু উৎসব’ মঞ্চে সাংস্কৃতিক উপ-পরিষদের শিল্পীরা জাতীয় ও উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন এবং কবি আশীষ কুমারের কবিতা ‘সূর্য সত্য শেখ মুজিব’ আবৃত্তি করেন, সংস্কৃতি কর্মী মাষ্টার মোহাম্মদ আলম। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী সহ উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের পর পূর্ব পাকিস্তানের নির্যাতিত জনগন মুক্তি সংগ্রামের প্রস্তুতি নেয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষনে মুক্তি সংগ্রামের ডাক দেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একাত্তরের মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন বাংলার নারী-পুরুষ সকলে। নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর ষোলই ডিসেম্বর এ দেশ বিজয় অর্জন করে।
এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উত্তরসূরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলার বুকে অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। বাংলার ইতিহাসের কলংক মুছাতে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাত্তরের ঘাতকদালাদের বিচার, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার, মানবতা বিরোধীদের বিচারের ব্যবস্থা করেছেন। ঘাতক দালালদের বিচার করে, বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার করে বাংলাকে কলংক মুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, বিশে^র বুকে বাংলাদেশ এখন রোলমডেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়কে এখন বাংলাদেশ। বাংলাদেশের আকাশে এখন উন্নয়নের নতুন সূর্যের উদয় হয়েছে। আজকের প্রজন্মদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাগবে প্রজন্ম। সকলস্তরের মানুষের মাঝে বঙ্গবন্ধুকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। জাতির পিতার ইতিহাস জানতে হবে, জানাতে হবে। এই কাজ করতে হবে, ছাত্রলীগকেই।
রামু উপজেলা স্বেচ্ছা সেবকলীগ রাজনীতিক সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সোমবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু উৎসবের আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন, কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ আইন সম্পাদক আব্বাস উদ্দিন চৌধুরী, মহিলা সম্পাদক মুসরাত জাহান মুন্নী, ইসলামাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর ছিদ্দিকী, রামু ব্রাদার্স ইউনিয়নের সভাপতি মো. নবু আলম, আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ, কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান, সহ-সভাপতি কায়সার চৌধুরী মুন্না, ছাত্রলীগ নেতা এড. কায়সার মাহমুদ প্রমুখ।
রামুতে বঙ্গবন্ধু উৎসব’ উদ্বোধন উপলক্ষে সোমবার সকাল থেকে রামু স্টেডিয়াম উৎসবমুখর হয়ে উঠে। বিকালে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী মিছিল-শ্লোগানে উৎসবস্থলে প্রবেশ করলে, রামু ষ্টেডিয়াম জনসমুদ্রে উৎসবে পরিণত হয়। মেলা প্রাঙ্গনে নানান রকমের পণ্য সামগ্রী নিয়ে বেচাবিক্রিতেও যেন উৎসব শুরু করে ব্যবসায়ীরা। মেলা প্রাঙ্গনে নৌকায় দোলা, চরকি ও নাগর দোলায় শিশু-কিশোররা চড়ে উৎসবে মেতে উঠে। উৎসবকে কেন্দ্র করে, বঙ্গবন্ধুর ছবি ও বঙ্গবন্ধু কথায় সাজানো হয়েছে বিভিন্ন সড়কের তোরণ, মেলা প্রাঙ্গন। আয়োজন করা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর চিত্র ও বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রতিযোগিতা। রাতে বঙ্গবন্ধু উৎসব মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, স্থানীয়শিল্পীরা।