নীতিশ বড়ুয়াঃ
কলকাতার ঐতিহাসিক ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন হয়েছে। এ উপলক্ষে আয়োজিত সভায় বিশেষ বক্তার বক্তব্য রাখেন, তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল। শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় এ সভার আয়োজন করে।
১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে ১০ লক্ষাধিক মানুষের সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দিবসটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই এ সভার আয়োজন করা হয়।
স্মরণীয় এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সুসম্পর্ক চিরকাল থাকবে, যেমনটা চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের যে সকল সেনাবাহিনী সহযোগীতা করেছিলেন, তাদের অবদান বাংলাদেশের মানুষ কোনদিন ভুলবেনা। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ বক্তার বক্তব্যে আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। বঙ্গবন্ধু ও ইন্দ্রিরা গান্ধী বাংলাদেশ-ভারতের মাঝে এক মৈত্রীময় সেতু রচনা করেছিলেন। সেই মৈত্রীময় সেতু ধরেই হাঁটতে চায় বাংলাদেশের মানুষ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক অর্জন বাংলাদেশ। বাংলাদেশের জন্য বঙ্গবন্ধুর যে আত্মত্যাগ, তা সমগ্র বিশ্বের কাছে অনুসরনীয়। বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু বাংলাদেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে এবং সোনার বাংলা গড়তে সংগ্রাম করে গেছেন। আজ তার কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পথ ধরেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এই এগিয়ে যাওয়ার সাথে অতীতের মতো ভারতের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করি। এমপি কমল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের উপর বক্তব্য রাখলে, উপস্থিত জনতা মুর্হুমুহু করতালি দিয়ে তাকে অভিনন্দিত করেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, এখন ভারতের তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মধ্যে আর নেই। কিন্তু চিরকাল তাঁদের স্মরণ করে রাখবে মানুষ। তিনি দু’দেশের মধ্যে মৈত্রীর সম্পর্ক বজায় রাখার বার্তা দেন। উল্লেখ্য যে, পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধুর সম্মানে আয়োজিত বিশাল জনসভায়ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, বাংলাদেশ হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান, উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, হাইকমিশনের প্রথম সচিব মোফাখ্খারুল ইসলাম, দৈনিক আমাদের সময় এর ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক সন্তোষ শর্মা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ভারতীয় ৩১ গুণীজনকে সংবর্ধনা ও পুরস্কৃত করা হয়। পরে তথ্য মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে কলকাতা প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযদ্ধের শহীদ ভারতীয় সংবাদিক দীপব বন্দোপাধ্যায় ও সুরজিৎ ঘোষের স্মরণে স্মৃতি ফলক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা এবং আগের দিন ৫ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।