অনলাইন ডেস্কঃ
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর ভর করে মহামারীর মধ্যেই বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ৪৪ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করল। বুধবার দিন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৪ দশমিক ০২৮ বিলিয়ন ডলার, যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
এই রিজার্ভ দিয়ে প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার হিসেবে ১১ মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়।
গত ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের রিজার্ভ প্রথমবারের মত ৪৩ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধের পর তা ৪২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। তবে রেমিটেন্সে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকায় এক মাস না যেতেই রিজার্ভ আবার ৪৪ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করল।
আকুর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে। তার আগ পর্যন্ত রিজার্ভ ৪৪ বিলিয়ন ডলারের উপরেই থাকবে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ-এই নয়টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যে সব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।
২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের রিজার্ভে ছিল ৩২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, গত এক বছরে রিজার্ভ বেড়েছে ১১ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার।
মহামারীর মধ্যে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল দেশে, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ।
নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১৯৬ কোটি ২৬ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে, যা গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি। সবমিলিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ১৪ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
আর ফেব্রুয়ারি মাসের ২৩ দিনে (১ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি) ১৪৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি।
জুলাই-জানুয়ারি সময়ে পণ্য রপ্তানি থেকে ২২ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের একই সময়ের ১ দশমিক ১ শতাংশ কম।
আর অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) ২৮৮ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বিদেশি ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ০৮ শতাংশ বেশি।
অন্যদিকে এই ছয় মাসে আমদানি ব্যয় আগের বছরের তুলনায় ৬ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে
সূত্রঃ বিডিনিউজ