আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের ওপর চালানো সহিংসতার নিন্দা করে সামরিক বাহিনীকে এ বিষয়ে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
তবে চীন ও রাশিয়ার ভেটোর কারণে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলকে ‘অভ্যুত্থান’ আখ্যা দেওয়া বা এর বিরুদ্ধে আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যায়নি।
দ্য অ্যাসিসটেনস অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন নামের একটি সংস্থার হিসাবে, ১ ফেব্রুয়ারির পর মিয়ানমারে বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় ৬০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে; আটক করা হয়েছে প্রায় দুই হাজার মোনুষকে।
নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক জান্তা। তারপর থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশে সামরিক শাসনবিরোধী বিক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে।
বুধবার বন্দরনগরী ইয়াংগনের দুটি অঞ্চলে আটকে পড়া বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গভীর রাতেও রাবার বুলেট ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে পুলিশের ব্যারিকেড গলে যারা বেরিয়ে আসতে পেরেছেন, তারা জানান, অনেক লোককে বন্দি করা হয়েছে এবং আটকদের মারধর করা হয়েছে।
মিয়ানমারে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বুধবার সেনা প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের দুই সন্তান এবং তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ছয়টি কোম্পানিকে ‘কালো’ তালিকাভুক্ত করে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব এক টুইটে বলেছেন, তার দেশও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করছে।
নিউ ইয়র্কে এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ জানায়, তারা নারী, কিশোর ও শিশুসহ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস হামলার কঠোর নিন্দা করছে। সামরিক বাহিনীকে ‘সর্বোচ্চ সহনশীল’ আচরণের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি পরিস্থিতির ওপর ‘নিবিড় পর্যবেক্ষণ’ করা হচ্ছে।
তবে ভারত, চীন, রাশিয়া ও ভিয়েতনামের বিরোধিতার কারণে ব্রিটেনের প্রস্তাবিত খসড়া বিবৃতি থেকে মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের নিন্দা এবং আরও কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারির বক্তব্য বাদ দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে মিয়ারমারের সামরিক কর্তৃপক্ষের কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। এর আগেও সামরিক শাসনের অধীনে সহিংস বিক্ষোভ দমনের বিরুদ্ধে এ ধরনের নিন্দায় পাত্তা দেয়নি মিয়ানমার।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন পেতে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা দুই কোটি ডলারে একজন ইসরায়েলি-কানাডিয়ান লবিস্ট নিয়োগ করেছে।
বেন-মেনাশে নামের ওই লবিস্ট শনিবার রয়টার্সকে বলেছেন, তার কাজ হচ্ছে ওয়াশিংটনকে বোঝানো যে মিয়ানমারের জেনারেলরা চীনের প্রভাব থেকে সরে আসতে এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন চাইছে। পাশাপাশি তারা রোহিঙ্গাদেরও ফিরিয়ে নিতে চায়, যারা ২০১৭ সালে সামরিক বাহিনীর অভিযানে উদ্বাস্তু হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে।
সূত্রঃ বিডিনিউজ