গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার তদন্তে বাংলাদেশ পুলিশের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কলকাতায় পৌঁছেছে। সোমবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ঢাকা থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমানে তারা রওনা হয়ে রাত ১০টা ২০ মিনিটে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছান। মঙ্গলবার সকালে ওই প্রতিনিধি দল কাজ শুরু করেছেন। খবর বাংলা ট্রিবিউনের।
জানা গেছে, সল্টলেকে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) অফিসে বাংলাদেশের ওই প্রতিনিধিরা জরুরি বৈঠক করবেন।
গুলশান ও কিশোরগঞ্জে জঙ্গি হামলার পর বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিনিধি দল ভারতে এসেছে। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন বা র্যাবের প্রতিনিধি আছেন।
এনআইএ-র এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কী কারণে বাংলাদেশ পুলিশের ওই প্রতিনিধি দল কলকাতায় এসেছেন তা তিনি নিশ্চিত নন। তবে সন্ত্রাসবাদ ও ভারতীয় জাল নোট প্রতিরোধে দু’দেশের পুলিশ সমন্বয় করে কাজ করছে। জাল নোটের তদন্ত করতেই হয়তো কলকাতায় এসেছেন।
তবে গোয়েন্দাদের অন্য একটি সূত্রের দাবি, বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিনিধি দলটি জামায়াতুল মুজাহাদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) অন্যতম সন্দেহভাজন আবু সুলেমান ওরফে মোহাম্মদ সুলেমানের বিষয়ে খোঁজ নিতে কলকাতায় এসেছে।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি, সুলেমান নামের (৩০) ওই যুবক গুলশান ও কিশোরগঞ্জে সন্ত্রাসী হামলার অন্যতম হোতা। এমনকি কিশোরগঞ্জে হামলার সময় সুলেমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল বলে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে।
গত ৪ জুলাই বর্ধমান স্টেশন থেকে আটক সন্দেহভাজন আইএস সদস্য ও বীরভূমের বাসিন্দা মো. মুসাউদ্দিন ওরফে মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদে সুলেমানের নাম আসে। সুলেমান ২০১৪ সালে মুসাকে আইএসের হয়ে কাজ করার নির্দেশ দেয়। ওই বছরই বীরভূমে ও মালদহে এসে মুসার সঙ্গে সুলেমান দেখাও করে যায়।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, দেহরক্ষীসহ কলকাতার এক প্রোমোটারকে বীরভূমের লাভপুরে তার বাগানবাড়িতে গলা কেটে খুন ও পরিচারিকাকে ধর্ষণ করার ভিডিও ধারণ করে মুসা। যা সুলেমানের নির্দেশ ঘটানো হয়েছিল।
মুসার ভাষ্য অনুযায়ী, মোবাইল ফোনে ওই ভিডিও রেকর্ডিং করার কথা ছিল এবং সুলেমান বলেছিল ওই ভিডিও বাংলাদেশেও পাঠানো হবে। তার আগেই অবশ্য মুসা ও তার দুই সঙ্গী ধরা পড়ে। কিন্তু সেই সুলেমানের খোঁজ এখনও পাওয়া যাচ্ছে না।
যদিও বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের সূত্রে সুলেমানের একটি ছবি ভারতীয় গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। গোয়েন্দারা সন্দেহ করছেন বাংলাদেশি নাগরিক ওই যুবকের প্রকৃত নাম আদৌ সুলেমান নয়। মুসা তাকে প্রথমে ‘জিহাদি জন’ সাঙ্কেতিক নামে চিনত। পরে সে মুসাকে জানায়, তার নাম আবু সুলেমান। তবে ভারতীয় গোয়েন্দাদের বক্তব্য, মুসাকেও ওই যুবক তার আসল নাম বলেনি।