অনলাইন ডেস্কঃ
সরকারি কর্মকর্তাদের ১৫০ দিন বা পাঁচ মাসের বেশি সময় ওএসডি (অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি) করে রাখার বিধান অবৈধ ও বেআইনী ঘোষণা করে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে। রায়ের অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে স্বাক্ষরের পর সোমবার সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে ২১ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।
২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট ১৫০ দিনের বেশি সরকারি কর্মকর্তাদের ওএসডি করে রাখার বিধান অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। একই সঙ্গে যেসব সরকারি কর্মকর্তা ১৫০ দিনের বেশি সময় অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) আছেন তাদের নিজ নিজ পদে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া এ বিষয়ে একজন সিনিয়র সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে, সরকারি কোনো কর্মকর্তাকে ১৫০ দিনের বেশি ওএসডি করে রাখা যাবে না। ওএসডি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্ত কাজ অবশ্যই ১৫০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, কোনো কর্মকর্তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) হিসেবে পদায়ন করা হলে অকারণে দেরি না করে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা নিরূপণের জন্য সরকারকে অবশ্যই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। তদন্ত কমিটি যদি অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পায় তাহলে সরকারের উচিত হবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
যারা ১৫০ দিনের বেশি ওএসডি আছেন, রায়ের অনুলিপি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের স্বপদে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির অপেক্ষায় আছে।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।
২০১২ সালের জুন মাসে ওএসডির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করেছিলেন সাবেক সচিব এম আসাফ-উদ-দৌলা।
রিটে বলা হয়, ১৯৯১ সালের ৩ অক্টোবর মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সর্বনিম্ন ৪৫ এবং সর্বোচ্চ ১৫০ জনকে ওএসডি করে রাখার বিধান রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ওএসডির সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না উল্লেখ করে এ বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে আদালতের কাছে সিদ্ধান্ত চাওয়া হয়।
সূত্র: সমকাল