অনলাইন ডেস্কঃ
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার দেওয়ায় কোনো নারী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) না রাখার জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যে সুপারিশ করেছে, তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে করা রিটের ওপর কোনো আদেশ দেননি হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে মঙ্গলবার এ বিষয়ে করা রিটটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হয়। তখন আদালত বলেন, বিষয়টি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশ মাত্র। এমন সুপারিশ গেজেট আকারে প্রকাশিত হলে তখন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আদেশ দেওয়া হবে। তাই সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
রিটকারীর আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ আদালতকে বলেন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি মাঝেমধ্যে এমন সব সিদ্ধান্ত দিচ্ছে, যা শুনলে মনে হয় তারা ফতোয়া দিচ্ছে। দিনে দিনে তারা ফতোয়া দেওয়া কমিটিতে পরিণত হচ্ছে। পরে আদালত রিট আবেদনটির শুনানি চার সপ্তাহ মুলতবির আদেশ দেন।
ফাওজিয়া করিম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বিষয়টি প্রথমে মৌখিকভাবে হাইকোর্টের নজরে নিয়েছিলাম। কিন্তু আদালত আমাদের আবেদন আকারে দাখিল করতে বলেন। পরে এ বিষয়ে রিটটি দায়ের করা হয়। মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এফএলএডি)-এর আইন ও গবেষণা বিভাগের পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম রিটটি দায়ের করেন। রিটে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানসহ তিনজনকে বিবাদী করা হয়েছে। রিট আবেদনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশ কেন বৈষম্যমূলক, বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
গত ১৩ জুন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়ায় কোনো নারী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) না রাখার জন্য সুপারিশ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটি এক্ষেত্রে যেসব জায়গায় নারী ইউএনও রয়েছেন, সেখানে পুরুষ কোনো ব্যক্তিকে দিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করার কথা বলে। পাশাপাশি গার্ড অব অনার প্রদান দিনের বেলায় আয়োজনেরও সুপারিশ করা হয়। পরে এটি সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানান বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি।
সূত্র: সমকাল