এক.
মুদ্রা
আঙুলে চাষ করবো তন্ত্রমন্ত্র বৃক্ষ,
সে বৃক্ষের ইশারায় প্রাচীন মুদ্রারা
ছুটে আসবে বাতাসের মতো,
আকাশ ছোঁয়া এক লাল প্রাসাদ বানাবো,
মন্ত্র বৃক্ষের ইশারায় নার্সিসাসের রুপে ধুয়ে নিব শরীর। তুমি ও সেদিন অনুগত সাপের মতো পায়ে কাছে কুন্ডলী পাকিয়ে বসে থাকবে!
জেনে গেছি পৃথিবীতে আর প্রেম নেই,
ওরা মুদ্রার দখলে,
সকল মায়া নার্সিসাসের ঘোরে বুদ হয়ে অাছে।
মন চাইলেই মন্ত্র বৃক্ষের ইশারায় ঝড় তুলবো,
সমুদ্র থেকে টেনে আনবো মনি মুক্তা,
গুহার অতল থেকে অমূল্য রত্ন।
মন চাইলেই সোনার বিন বাজিয়ে
তোমায় নাচাবো, হাসাবো,
জেনে গেছি তুমি ও তোমরা বড্ড মুদ্রা ভালোবাসো…
দুই.
বৃষ্টি দিন
ক্ষ্যাপা ধুলোর ডানায় ভর করেছে কোমল বৃষ্টি।
ভিজে গেছে পথের কোলাহল!
পাথরের ফুলদানি ভরে গেছে মাটির গন্ধে!
কাঁচের জানালা বেয়ে দ্রুত ফুরিয়ে যায় বৃষ্টির আয়ু!
বুকের ভেতর পাখা ঝাপটায় ভেজা কাক
বারান্দায় ঝরে পরা নয়নতারার পাতায়, ভেসে উঠে ফেলে আসা হিজলের দিন।
বুকভরা স্মৃতি নিয়ে ছুঁয়ে যায় আদ্র বাতাস,
এমন বৃষ্টি দিনে, ডানা ভাঙা শালিকের মতো
নিশ্চুপ বসে থাকি স্মৃতির সবুজ বনে।
তিন.
প্রেম এক দারুচিনি দ্বীপ
ওগো সুন্দর, আমার কোমল কাজল চোখে গড়ে দাও সুগন্ধী দারুচিনি দ্বীপ।
এসো প্রাণময়, আমাকে বানাও উচ্ছল নদী!
এসো প্রিয় , ওষ্ঠে কাঁপন তুলে গড়ে যাই চুম্বন দেশ,
শরীরে শরীর মিলে হোক প্রেমের সেতু।
ওগো মনময়, আমাকে বানাও তুমি আলোর শহর
কাছে থেকে আরো কাছে আসো
বুকের ভেতর নৃত্য করুক তোমাকে দেখার সুখ।
চার.
প্রতীক্ষা
আজ তোমার প্রতীক্ষায় ছিলাম
প্রতীক্ষায় ছিলো কাজলপরা রক্তজবা দিন।
মৃদু বাতাসের আওয়াজে, বার বার নিজেকে খুলেছিলো প্রতীক্ষারত কৌতূহলী দরজা!
প্রতীক্ষায় ছিলো উষ্ণ অনুভূতি নিয়ে ললাটের টিপ, কাঁচের চুড়ি, বাসন্তি শাড়ি।
অদূরে স্বপ্নরা প্রতীক্ষায় ছিলো তোমার স্পর্শে অপরাহ্নের কাঁশবন ছোঁবে!
মাছরাঙা বুকে নিয়ে নদীটিও প্রতীক্ষায় ছিলো তোমার চোখের স্বচ্ছতায় নিজেকে দেখে নিতে
ইচ্ছের সরল রেখা ধীরে ধীরে ঢেকে গেলো উপেক্ষার ঝরা পাপড়িতে
সারাদিন কুটুম পাখি ডেকে গেল অহেতুক ডালিম ডালে!
ধ্রুপদীর শাড়ির মতো প্রতীক্ষার ভাঁজ খুলতে খুলতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে গেলো একটা রক্তজবা দিন!
অন্ধকারে প্রতীক্ষায় রেখে অভিমানে ম্লান হল বিকালের ফিনফিনে কাঁশবন।
মলিন জোছনায় ভেজা কুয়াশা দুচোখে জমিয়ে,
এই দীর্ঘ রাতে, বাসন্তি শাড়িতে সোডিয়াম আলো মেখে অন্তহীন প্রতিক্ষায় জেগে আছি অচঞ্চল।